৬ মাস বেতন নেই শিক্ষকদের, তার পরও জাকাত দিতে হবে ২ হাজার!

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

রাজশাহীর তানোরে মসজিদ ভিত্তিক ইসলামী ফাউন্ডেশনের শিক্ষক প্রতি দুই হাজার টাকা জোরপূর্বক যাকাত হিসেবে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সুপার ভাইজারের বিরুদ্ধে। ওই উপজেলার একাধিক শিক্ষক এই অভিযোগ করেছেন। তবে সুপার ভাইজারের দাবি, তাদের ব্যক্তিগত কোনো আয় থেকে যাকাত দাবি করা হয়নি বরং তাদেরকে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যাকাত নিয়ে ইসলামী ফাউন্ডেশনে জমা দিতে বলা হয়েছে।

উপজেলার সংশ্লিষ্ট সূত্র ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলায় ১১০ জন ইসলামী ফাউন্ডেশনের শিক্ষক রয়েছেন। যাদের প্রতি মাসে বেতন ৫ হাজার টাকা কিন্তু ৬ মাস ধরে এই শিক্ষকরা বেতন ভাতা পাচ্ছেন না। এদিকে ২৭ রমজানের মধ্যে শিক্ষক প্রতি ২ হাজার করে যাকাতের নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা সুপার ভাইজার মাহমুদুল্লাহ। তিনি এমসি রুহুল, জিসি মোজাম্মেল ও ইয়াকুবকে যাকাতের টাকা উত্তোলনের দায়িত্ব দিয়েছেন বলে শিক্ষকদের একটি অংশ জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চলতি মাসসহ ৬ মাস বেতন ভাতা দেয়নি। অথচ যাকাতের টাকা আদায়ে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। আমরাও সাব জানিয়ে দিয়েছি ৬ মাসের বেতন ঈদ বোনাস পেলে যাকাতের টাকা দিতে পারব। তাছাড়া কোনোভাবেই দেওয়া সম্ভব হবে না।

আরেক শিক্ষক বলেন, এই বেতন জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন। যদি ৬ মাস বেতন না পাই তাহলে সংসার কিভাবে চলে, সেটা কারো ভাবনায় নেই। আবার যাকাতের টাকা না দিলে চাকুরিচ্যুত করারও হুমকি দেওয়া হয়েছে। যেখানে মাসে ৫ হাজার টাকা বেতন। সামান্য এই বেতনে কি হয়। ১১০ জন শিক্ষকের বিপরীতে যাকাত উঠবে দুই লাখ ২০ হাজার টাকা। বর্তমান বাজারের যে অবস্থা তাতে ৫ হাজার টাকা বেতনে কি হয়, সেটার কোন সমাধান নেই।

এ বিষয়ে যাকাতের টাকা উত্তোলনের দায়িত্বে থাকা মডেল লাইব্রেরিয়ান রুহুল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উপজেলা থেকে চার লাখ টাকা যাকাত তুলে সরকারি যাকাত ফ্যান্ডে জমা দিতে হবে।

কার নির্দেশে শিক্ষক প্রতি ২ হাজার টাকা যাকাত দিতে হবে জানতে চাইলে তিনি জানান, মন্ত্রণালয়ের চিঠি আছে, স্যারেরা নির্দেশ না দিলে কেন তুলব। ২৭ রমজানের মধ্যে টাকা জমা করতে হবে।

অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা সুপার ভাইজার মাহমুদুল্লাহ বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের শিক্ষকদের ২ হাজার, ৩ হাজার, ৫ হাজার, ১০ হাজার করে তাদের এলাকা থেকে যাকাত আদায় করে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জমা দিতে ডিসি স্যার, পরিচালক স্যার, ডিআইজি স্যার সবাই বলেছেন। তাদের ব্যক্তিগত কোনো টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার পংকজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, বিষয়টি অজানা, খোঁজ নিয়ে জানা হবে। তবে এমন তো হওয়ার কথা না। সূত্র; কালের কণ্ঠ