চট্টগ্রামে মণ্ডপের তোরণ ভাঙচুর

৬ মাস ধরে কারাগারে থাকা বিএনপির তিনজনও আসামি

কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগের জেরে ১৩ অক্টোবর হাটহাজারী উপজেলার সরকারহাট বাজারসংলগ্ন সোমপাড়া সর্বজনীন পূজামণ্ডপের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা ও মণ্ডপের গেট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরদিন এই ঘটনায় হাটহাজারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবিদুর রহমান বাদী হয়ে ৬১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার ৬১ আসামির মধ্যে ১৫ নম্বরে রয়েছে জোনায়েদ মেহেদীর নাম। ৫৩ নম্বরে সৈয়দ ইকবাল ও ৫৫ নম্বরে আকরাম উদ্দিন।

কারা সূত্র জানায়, এ বছরের ১৬ এপ্রিল হেফাজতের মামলায় কারাগারে পাঠানো হয় সৈয়দ ইকবালকে। এরপর জোনায়েদ মেহেদীকে ২০ এপ্রিল ও আকরাম উদ্দিনকে ১০ মে কারাগারে পাঠানো হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে গত ২৬ মার্চ হাটহাজারীতে বিক্ষোভ-সহিংসতা হয়েছিল। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

কারাবন্দী থাকা ব্যক্তিকে আসামি করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মামলার বাদী হাটহাজারী থানার এসআই আবিদুর রহমান ফোন ধরেননি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন জানিয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক বলেন, জেল থেকেও হুকুম দিতে পারে।

তবে জেল থেকে কোনো আসামির হুকুম দেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানান চট্টগ্রাম কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, বন্দীরা কড়া নিরাপত্তার মধ্যে থাকেন। বর্তমানে স্বজনদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ বন্ধ রয়েছে।

কারাগারে থাকা তিনজন ভাঙচুরের মামলায় আসামি হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেন হাটহাজারী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ। তিনি বলেন, প্রকৃত অপরাধী চিহ্নিত না করে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে পুলিশ ঢালাওভাবে বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের আসামি করছে।

ঘটনাগুলো প্রশ্নবিদ্ধ করে মামলা ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্যই পুলিশ এ কাজ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত। তিনি  বলেন, যে পুলিশ সদস্য যাচাই-বাছাই না করে কারাগারে থাকা ও নিরীহ লোককে আসামি করেছে, তার শাস্তি হওয়া উচিত। এ ঘটনার কারণে প্রকৃত আসামি পার পেয়ে যেতে পারে।

প্রথম আলো