৬ মাসে দিল্লিতে করোনা আক্রান্ত ৪৭ লাখ!

করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত ভারত। আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। দিল্লির ২৩ শতাংশ মানুষই করোনা আক্রান্ত! মঙ্গলবার এমনই বিস্ফোরক তথ্য তুলে ধরল দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তারা জানাচ্ছে, ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল (এনসিডিসি)-এর চালানো সেরো সার্ভে-তে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। ভারতের রাজধানীর জনসংখ্যা ২ কোটির কাছাকাছি। তার মধ্যে গত ৬ মাসে প্রায় ৪৭ লাখ মানুষ এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে মত দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের।

২৭ জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত ওই গবেষণা চালিয়েছিল এনসিডিসি। তাদের সহযোগিতা করেছিল দিল্লি সরকার। সেই গবেষণাতেই উঠে এসেছে এই তথ্য। আরও জানা গেছে, আক্রান্তদের বেশিরভাগই উপসর্গহীন।

সেরোলজিক্যাল সার্ভে কী? সেরো অর্থাৎ সিরাম বা রক্তরস। তা পরীক্ষা করেই এই সমীক্ষা করা হয়। কোনও ব্যক্তির শরীরে ভাইরাস সংক্রমণ হলে তাঁর দেহ যে প্রোটিন তৈরি করে তাই আসলে অ্যান্টিবডি। ভাইরাসের বিরুদ্ধে ঢালের কাজ করে ওই অ্যান্টিবডি। তা রক্তে পাওয়া গেলেও নিশ্চিত হওয়া ওই ব্যক্তির শরীরে ভাইরাস সংক্রমণ ঘটেছিল। এ ক্ষেত্রে রক্তরস পরীক্ষা করে দেখা হয়েছিল, রক্তে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কিনা। সেই পরীক্ষা যে ফল এসেছে তা এ দিন জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সেরো সার্ভের মাধ্যমে জানা গেছে দিল্লিতে গত ৬ মাসের মধ্যে গড়ে ২৩.৪৮ শতাংশ মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। এই গবেষণায় এটাও ধরা পড়েছে যে, আক্রান্তরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপসর্গহীন। দিল্লির ১১টি জেলায় ওই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের থেকে লিখিত অনুমতি নিয়েই ওই পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। এলিসা টেস্ট পদ্ধতি ব্যবহার করে চালানো এই পরীক্ষা দেশের মধ্যে অন্যতম বড়। এ ক্ষেত্রে ২১ হাজার ৩৮৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল।

এ দিন সারা দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সাডে ১১ লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে। দিল্লিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ২৩ হাজারের কিছু বেশি মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৬৬৩ জনের। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এ দিনের যে তথ্য সামনে এসেছে তা অবাক করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, লকডাউন, কন্টেনমেন্ট বিধি এবং নানা নজরদারির প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংক্রমণে রোধ করা গেছে। সেই সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব মানা, মাস্ক পরার কথাও মেনে চলতে বলা হয়েছে।

 

সুত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন