৬টি কলেজ সরকারীকরণে আনন্দে ভাসছে নওগাঁ

নিজস্ব প্রতিবেদক,নওগাঁ:
সারাদেশে সদ্য সরকারি করা হয়েছে ২৭১টি কলেজ। আর এর মধ্যে নওগাঁ জেলার ৬টি কলেজকে সরকারিকরন করায় আনন্দের জোয়ারে ভাসছে সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। নওগাঁর প্রত্যন্ত অঞ্চলের এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সরকারিকরন করায় প্রধানমন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্যদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

জানা গেছে, গত গত ২০০৮ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর যে নির্বাচনী ইস্তেহার দিয়েছিলেন; সারাদেশে কলেজগুলোকে সরকারিকরন করা তারই একটি অন্যতম অঙ্গিকার ছিল। এরই অংশ হিসাবে নওগাঁর বরেন্দ্র অধ্যুষিত নিয়ামতপুর উপজেলার নিয়ামতপুর কলেজ, মান্দা উপজেলার মান্দা মমিন শাহানা ডিগ্রি কলেজ, আত্রাই উপজেলার মোল্লা আজাদ মেমোরিয়াল কলেজ, রাণীনগর উপজেলার শের-এ-বাংলা ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়, পোরশা উপজেলার পোরশা ডিগ্রি কলেজ এবং ধামইরহাট উপজেলার ধামইরহাট এমএম ডিগ্রি কলেজকে সরকারি ঘোষনা করা হয়েছে। জেলার এসব প্রত্যন্ত অঞ্চলের কলেজগুলোকে সরকারিকরণ করার কারনে এলাকার গরীব অসহায় খেটে খাওয়া মানুষের সন্তানরা বাড়ি থেকে পান্তা ভাত খেয়ে এসে এসব সরকারি কলেজে কম খরচে উচ্চতর ডিগ্রি গ্রহন করতে পারবে।

জেলার নিয়ামতপুর কলেজের শিক্ষার্থী জনি হোসেন, কাদের হোসেন, রূপালী আক্তারসহ অনেকেই বলেন, আমাদের অনেক দিনের স্বপ্ন এতদিন পর বাস্তবায়ন করা হলো। এখন আমাদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করতে নওগাঁ কিংবা রাজশাহী যেতে হবে না। এখন আমরা বাড়ির পাশে আমাদের সরকারি কলেজে পড়াশোনা করতে পারবো ভাবতে ভালোই লাগছে।

একাধিক শিক্ষকরা বলেন, প্রত্যন্ত এলাকার অবহেলিত জনপদের সন্তানদেরকে তাদের বাড়ির পাশের সরকারি কলেজে পড়ালেখা করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আর স্থানীয় সংসদ সদস্যদের অবদান অনেক। তারা যদি চেষ্টা না করতো তাহলে আজ আমাদের এই কলেজ সরকারি না হয়ে অন্য কোন এক কলেজ সরকারি হতো। তাই বর্তমানে আমরা আনন্দের জোয়ারে ভাসছি।

সদ্য সরকারি হওয়া জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার নিয়ামতপুর কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে কলেজ সরকারিকরণ করার মাধ্যমে। তাই আমরা আনন্দিত। স্থানীয় সংসদ সদস্য সাধন চন্দ্র মজুমদারসহ প্রধানমন্ত্রীকে জানাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, এ আসনটিকে বরেন্দ্র অঞ্চল বলা হয়ে থাকে। তাই এ প্রত্যন্ত অঞ্চলের কলেজটি সরকারি করার কারনে এলাকার গরীব-অসহায় মানুষের সন্তানরা বাড়ির পান্তা ভাত খেয়ে এসে সরকারি কলেজে পড়ালেখা করতে পারবে। তারা সরকারি একটি কলেজের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে। তাই তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

নওগাঁর মান্দা উপজেলার মান্দা মমিন শাহানা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ বেদারুল ইসলাম বলেন, উপজেলার সর্বোচ্চ একমাত্র আদর্শ বিদ্যাপঠি নামে পরিচিত এই কলেজটি। এই বিদ্যাপিঠ দীর্ঘ ৪৩ বছর হাটিহাটি পা পা করে আজ সরকারি হয়েছে। কলেজ সরকারিকরন করায় আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরন হয়েছে। তাই আমরা এখন আনন্দের জোয়ারে ভাসছি। আর এর পেছনে যে মানুষটির অবদান সবচেয়ে বেশি তিনি হলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর তারপর আমাদের এলাকার সংসদ সদস্য বর্তমানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন।

জেলার আত্রাই উপজেলার মোল্লা আজাদ মেমোরিয়াল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান দুলু বলেন, আত্রাই একটি প্রসিদ্ধ উপজেলা। এক সময়ের রক্তাক্ত জনপদ নামে খ্যাত এই উপজেলা। বর্তমানে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের নেতৃত্বে এই জনপদে শান্তির সুবাতাস বইছে। তারই একটি জ্বলন্ত প্রমান হলো এই কলেজটি সরকারিকরণ করা।

স্থানীয় সংসদ সদস্যের একান্ত প্রচেষ্টায় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদের্শনায় অবশেষে এই কলেজটি সরকারি করা হলো। এই প্রত্যন্ত এলাকার আদর্শ বিদ্যাপিঠ মোল্লা আজাদ মেমোরিয়াল কলেজ। কলেজটি সরকারি করায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত। আর এর জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এই কলেজ ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে জানাই অনেক অনেক অভিনন্দন, শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ।

এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে কাজটি করেছেন তার জন্য দেশের সকলের কাছে তিনি প্রশংসার দাবিদার। তিনি তার আসনের সকল জনসাধানের পক্ষ থেকে তার দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন।
স/শ