৫৭৮ দিন পর শিক্ষার্থীদের জন্য খুলল রাবির আবাসিক হল

নিজস্ব প্রতিবেদক:

করোনায় দীর্ঘ দেড় বছর (৫৭৮ দিন) বন্ধ থাকার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলগুলো খুলেছে। রোববার (১৭ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে শিক্ষার্থীরা হলে প্রবেশ শুরু করেছেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, গোলাপ ফুল ও চকলেট দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়া হয়। একই সঙ্গে আগামী ২১ অক্টোবর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে ক্লাস শুরু হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়া কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আশা করছি শিক্ষার্থীরা এখন নির্বিঘ্নে তাঁদের ক্লাসগুলো শুরু করতে পারবে। তাঁরা যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে এবং ন্যূনতম এক ডোজ টিকা নেয়। একই সঙ্গে হলে যেন তাঁরা মাস্ক পড়ে, স্যানিটাইজার ব্যবহার করে এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখে। এসব মানলে করোনা পরিস্থিতি আর খারাপ দিকে যাবে না। তবে আমাদের এ সংক্রান্ত সার্বিক প্রস্তুতি আছে।

সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো ঘুরে দেখা গেছে, আবাসিক শিক্ষার্থীরা তাঁদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে হলে আসছেন। দীর্ঘদিন পরে হলে ফিরতে পেরে শিক্ষার্থীরা আনন্দ উল্লাস করছেন। অপরদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষার্থী এখনো করোনা টিকার আওতায় আসেনি তাঁদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে টিকাদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রবিবার সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসিতে শিক্ষার্থীদের প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান শুরু হয়েছে। আগামী ২২ অক্টোবর পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। এ ছাড়া হলগুলোর ভেতরে আইসোলেশন রুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হলের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্যবিধির চার্ট টাঙানো আছে।

শের-ই বাংলা এ. কে ফজলুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সাজু বলেন, দীর্ঘ দিন পর হলে থাকব। পুরোনো মুখগুলোর সঙ্গে আবার দেখা হবে। সব মিলিয়ে অন্যরকম এক অনুভূতি কাজ করছে।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. সাব্বির হোসেন বলেন, করোনায় দীর্ঘসময় বাড়িতে থাকতে থাকতে একঘেয়েমি হয়ে গেছে। পড়াশোনা থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছি। দেড় বছর পর হলে এসেছি। অনেক সিনিয়র, জুনিয়র ও বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হল। এ যেন এক ঈদের আনন্দ।

সার্বিক বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক ও শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ ড. জুলকার নায়েইন বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। এরই মধ্যে সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের বরণকালে আরও উপস্থিত ছিলেন, সহ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম, হল প্রাধ্যক্ষ মো. রওশন জাহিদ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৮ মার্চ করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, পরীক্ষা ও আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।

জেএ/এফ