১৮ কেজি মাংস ও ১০০ ডিম সাবাড়কারি এ কোন বাবুল?

আমানুল হক আমান, বাঘা:
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, এই সেই ব্যক্তি যিনি ১৮ কেজি খাসির মাংস এবং ১০০টি মুরগির ডিম এক টেবিলে বসে খেয়েছিলেন। তিনি খেতে বসলেই ২০ থেকে ২৫ কেজি ওজনের একটি কাঁঠাল নিমিশেই সাবাড় করে দিতে পারেন। বিদ্যুতের গতিতে ১১ মন ওজনের কাঁঠের গুল একাই কাঁধে তুলে নিয়ে বহন করতেন। এক দৌড়ে ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতেন স্বাভাবিক ভাবে।

একটানা ৪ ঘন্টা সাঁতার দিয়েও ক্লান্তি বোধ করতেন না তিনি। ১২৫ কেজি ওজনের বিশাল দেহ নিয়ে অনায়াসে গাছে উঠে ডাব পেড়ে খেতেন। তবে তা যে কারো সাথে বাজি ধরে একাজগুলো করতেন।

অবিশ্বাস্য এই মজাদার চরিত্রের লোকটির নাম বাবুল আক্তার। খাদক বাবুল নামে ব্যাপক পরিচিত তিনি। সে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার গঙ্গারামপুর গ্রামের মৃত খেলাফত উল্লাহ সরকারের ছেলে। তার বাবাও একজন শক্তিশালী মানুষ ছিলেন। তার বিশাল দেহ আর অস্বাভিক খাদ্য ভক্ষন করায় তার নাম পড়ে যায় ‘খাদক বাবুল আক্তার’।

যার স্বাভাবিক খাদ্য তালিকায় ৫ কেজি গরু মাংস লাগতো বলে জানান তিনি। এখনো মনে করলে ১০ থেকে ১৫ কেজি ওজনের একটি খাসির মাংস খেয়ে সাবাড় করতে পারবেন। কিন্তু শারিরিক সুস্থ্যতার কথা ভেবেই খাদ্য তালিকা কমিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া তার ভবিষ্যৎ ভেবে পরিবারের লোকজনও সেই ভাবে আর খেতে দেয় না।

খাদক বাবুল আক্তার বলেন, আমি ছোট থেকেই অনেক বেশি খেতে পারতাম। আমার মা বলতেন আমি ১৯৭৩ সালে জন্মের পরপরই নাকি পৌন এক কেজি করে গরু দুধ পান করাতাম। তারপর বেড়ে ওঠার পাশা-পাশি আরো বেশি খাবার লাগতো। তিনি প্রাপ্ত বয়সে প্রতিদিনের সকালের নাস্তায় পাঁচ কেজি গরু মাংস খেতেন। তা না হয়ে যদি ডিম হতো তাহলে ২৫ থেকে ৩০টি মুরগির ডিম দিয়ে নাস্তা করতেন। এটা ছিলো তার স্বাভাবিক খাবার। আর কেউ বাজি ধরলে তো কোন কথা ছাড়াই ১০ থেকে ১৫ কেজি মাংস ও ৫০ থেকে ১০০টি ডিম খেয়ে ফেলতাম। এখনো পারবো, কিন্তু বয়স বৃদ্ধিতে শারিরিক কিছু সমস্যার কারনে চিকিৎসকের কথা মতো কমিয়ে দিয়েছি।

তিনি ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে জীবনের প্রথম তার বন্ধুদের সাথে রাজধানীর ঢাকায় গিয়েছিলেন। ওই দিন রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় ‘ভূত রেস্তোরা’ নামের একটি হোটেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। বন্ধুদের সাথে বাজি ধরে ভূত রেস্তোরায় শতাধিক লোকের মধ্যে ১৮ কেজি খাসির মাংস এবং ১০০টি ডিম এক টেবিলে বসে খেয়েছিলেন।

এমন অবাক করা খাওয়া দেখে ধরা পড়ে যান মিডিয়ার চোখে। সে সময় অদ্ভুত এই খাওয়ার কাহিনি তুলে ধরে ‘খাদক’ ‘ভোজন রসিক’সহ রং-বেরঙ্গের নামে তাকে প্রচার করা হয়েছিল বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়।

স/অ