১৫ নেতাকে ছাত্রশিবিরের হুমকি: ছাত্রলীগ নেতার কক্ষের সামনে ককটেল !

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের ১৫ নেতাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছাত্রশিবিরের হুমকির পরে এবার ছাত্রলীগ নেতার কক্ষের সামনে থেকে একটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার সকালে সাংগঠনিক সম্পাদক চঞ্চল কুমার অর্কের কক্ষের সামনে থেকে ককটেলটি উদ্ধার করা হয়।

এর আগে শনিবার বিকেলে সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে হুমকি দেয়া ‘জাগ্রত বিবেক’ নামে ফেসবুক পেজটি আর খুঁজে পাওয়া যায় নি। তবে ছাত্রলীগ মোটেই বিচলিত নয় বলে জানিয়েছেন।

রাবি শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক আবুল বাশার আহমেদকেও হুমকি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সকালে জাগ্রত বিবেক নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ম্যাসেঞ্জারে আমাকে ম্যাসেজ দিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। শিবির ক্যাডাররাই এই হুমকি দিয়েছেন। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ১৫ নেতার ছবি দেয়া আছে।’

তিনি আরো বলেন, আমাকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে, ‘দু:খ তোমার জন্য, ক্যাম্পাসে বেশিদিন থাকতে পারবে না। কেবল ২য় বর্ষ!!! মাথায় এত বুদ্ধি নিয়ে আইনে ভর্তি হলে কি করে?’ তাদের স্বভাবই হচ্ছে পেছন থেকে চোরাগোপ্তা হামলা করা। শিবিরকে প্রতিহত করার জন্য সতর্ক আছি।

’জাগ্রত বিবেক ফেসবুক আইডি গিয়ে দেখা যায়, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ১৫ নেতার নামসহ ছবিযুক্ত করে একটি পোস্ট দেওয়া হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘রাবির এই সন্ত্রাসীদের এড়িয়ে চলুন, বুদ্ধিমানের জন্য ইশারাই যথেষ্ট’। পোস্টটির শিরোনামে লেখা হয়েছে, হুশিয়ার! হুশিয়ার! হুশিয়ার!।

জানা যায়, ছাত্রলীগের ওই ১৫ নেতার মধ্যে আছেন- রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, মাহফুজ আল আমিন, শাদিদ মুনতাসির এলাহী, শাহিন তালুকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কে এম সাদ্দাম হোসেন সজীব, সাংগঠনিক সম্পাদক মুশফিক তাহমীদ তন্ময়, ইমরান খান নাহিদ, মেহেদী হাসান মিশু, আবির আহসান লাবন, চঞ্চল কুমার অর্ক, সাবরুন জামিল সুষ্ময়, দপ্তর সম্পাদক আবুল বাশার আহমেদ, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক আসাদুল্লাহিল গালিব, উপ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল হক ও ছাত্রলীগের সদস্য নাজমুল হাসান।

ককটেল উদ্ধারের বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চঞ্চল কুমার অর্কে বলেন,  ‘সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি আমার (২০৫ নং) কক্ষের সামনে লাল টেপ দিয়ে মোড়ানো একটি ককটেল পড়ে আছে। পাশের রুমের এক ছোট ভাইও আমাকে বিষয়টি জানায়। তাৎক্ষণিকভাবে হল প্রশাসনকে জানালে পুলিশ এসে ককটেলটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে আমাকে আমাকে ফোনে ও ফেসবুকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমাকে ভয়-ভীতি দেখানোর জন্য আমার কক্ষের সামনে শিবির ককটেল রেখে গেছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের চেতনায় লালিত ছাত্রলীগ শিবিরের এসব অপকর্ম রুখে দাঁড়াতে সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।’

জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘হলের ভেতর থেকে পুলিশ একটি ককটেল উদ্ধার করেছে। হলের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘মাদার বখ্শ হলে ককটেল পাওয়া গেছে শুনেছি। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে।’

মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মাহাবুব হোসেন বলেন, ‘একটি নিষ্ক্রিয় ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় জড়িত কাউকে চিহ্নিত করা যায় নি।’

 

স/আ