হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডুবে শেষ হলো সিরিজ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

সিরিজে ম্যাচ তিনটি হলে ‘হোয়াইটওয়াশ’ শব্দটা বেশ জুতসই মনে হয়। কিন্তু দুই ম্যাচ সিরিজেও ‘হোয়াইটওয়াশ’ শব্দটি উচ্চারণ করতে ব্যকরণগত কোনো বাধা থাকার কথা নয়।

টেস্ট সিরিজ ১-০ ব্যবধানে হারলেও টি-টোয়েন্টি সিরিজে পুরো ২-০ তে হোয়াইটওয়াশের স্বাদ নিল বাংলাদেশ। তাও আবার দেশের মাটিতে। দিনটির আরও একটি বিশেষত্ব ছিল। সিলেটে এই প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ। তার পরিণতি যে এত করুণ হবে কে জানত?

সিরিজের শেষ ম্যাচে আজ রবিবার বাংলাদেশকে ৭৫ রানে হারিয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিল শ্রীলঙ্কা। সফরকারীদের দেওয়া ২১১ রানের পাহাড়সম টার্গেট তাড়া করতে গিয়ে ১৮.৪ ওভারে মাত্র ১৩৫ রানেই অল-আউট হয়ে যায় মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদের দল। দীর্ঘ সফরের শেষটাও শ্রীলঙ্কার পক্ষেই গেল। আর প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে তিন তিনটি সিরিজ জিতিয়ে তারকা বনে গেলেন লঙ্কান কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে।

২১১ রানের পাহাড়সম টার্গেট চেজিংয়ে নেমে দলীয় ৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

আগের ম্যাচে বিধ্বংসী ইনিংস খেলা ওপেনার সৌম্য সরকার আজ কোনো রান না করেই ধনাঞ্জয়ার বলে কুশল মেন্ডিসের তালুবন্দি হন। ইনিংসের তৃতীয় ওভার করতে এসে জোড়া আঘাত হানেন মাদুশাঙ্কা। তৃতীয় বলে মুশফিককে (৬) এবং শেষ বলে মোহাম্মদ মিথুনকে (৫) যথাক্রমে থিসারা পেরেরা আর কুশল মেন্ডিসের তালুবন্দি করেন তিনি।

মহাবিপদে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশ এরপর নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে। আমিলা আপনসোর বলে ধনাঞ্জয়ার তালুবন্দি হন ২৩ বলে ২৯ রান করা তামিম। এর পরেই ২ রানে আরিফুলকে এলবিডাব্লিউ করে দেন জীবন মেন্ডিস। ৬৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় টাইগাররা। একপ্রান্ত আগলে লড়াই করা অধিনায়ক মাহমুদ উল্লাহ দৃষ্টিকটুভাবে রান-আউট হয়ে যান ৩১ বল ৪১ রান করে।

আসা-যাওয়ার মিছিলে ৬ষ্ঠ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। বল হাতে ৪ ওভারে ৪৬ রান দেওয়া এই তরুণ ২০ রানে উদানার শিকার হন। অভিষিক্ত মেহেদি ১১, মুস্তাফিজ ৮ এবং অপর অভিষিক্ত আবু জায়েদ ২ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরলে ১৮.৪ ওভারে ১৩৫ রানেই অল-আউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে শ্রীলঙ্কা। তামিম এবং মাহমুদ উল্লাহর ক্যাচ মিসের সৌজন্যে কুশল মেন্ডিস এবং দানুশকা ৯৮ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন। শেষ পর্যন্ত পার্টটাইম বোলার সৌম্য সরকারের বলে গুনাথিলাকা (৪২) তামিম ইকবালের তালুবন্দি হলে ভাঙে এই জুটি।

তবে ২৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কুশল মেন্ডিস। রানের গতি বাড়াতে তিন নম্বরে নামানো হয় থিসারা পেরেরাকে। ১৭ বলে ৩১ রান করার পর অভিষিক্ত আবু জায়েদের বলে সৌম্য সরকারের তালুবন্দি হন তিনি।

এরপর মঞ্চে আসেন ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান। ৪২ বলে ৬ চার ৩ ছক্কায় ৭০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলা ওপেনার কুশল মেন্ডিসকে অভিষিক্ত মেহেদি হাসানের তালুবন্দি করেন তিনি। শেষ ওভারে উপুল থারাঙ্গা (২৫) সাইফ উদ্দিনের শিকার হলেও নির্ধারিত ২০ ওভারে ২১০ রানের পাহাড় গড়ে শ্রীলঙ্কা।

থারাঙ্গা আউট হলেও ১১ বলে ৩০ রান অপরাজিত থাকেন দাশুন শানাকা। আবু জায়েদ, মুস্তাফিজ, সাইফ উদ্দিন এবং সৌম্য ১টি করে উইকেট  নেন। অভিষিক্ত মেহেদি হাসান ২ ওভারে সবচেয়ে বেশি ২৫ রান দিয়ে কোনো  উইকেট পাননি।

সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে এসেছে চারটি পরিবর্তন। চোট কাটিয়ে ফিরেছেন দেশসেরা ওপেনার  তামিম ইকবাল। তাকে জায়গা দিতে দল থেকে বাদ পড়েছেন গত ম্যাচে অভিষিক্ত জাকির হাসান। গত ম্যাচে অপর অভিষিক্ত আফিফের জায়গায় সুযোগ পেয়েছেন মোহাম্মদ মিথুন। এছাড়া অভিষেক হয়েছে বিপিএল মাতানো অফ স্পিনিং অল-রাউন্ডার মেহেদি হাসান এবং পেসার আবু জায়েদ রাহির। গত ম্যাচেও চারজনের অভিষেক হয়েছিল।