হিমেল হাওয়ার সঙ্গে রাজারহাটে গুঁড়ি গুঁড়ি ‘শীত বৃষ্টি’

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

কুড়িগ্রামের রাজারহাটে শৈত্যপ্রবাহের কারণে মানুষজনের দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ দিন ধরে স্পষ্টভাবে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি।

বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কমে যেতে থাকে। সেই সঙ্গে হিমেল হাওয়ায় শুরু হয় হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় সাধারণ মানুষসহ খেটে খাওয়া মানুষজন জড়োসড়ো হয়ে থাকে।

রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অধিদফতরের ইনচার্জ সুমন চন্দ্র সরকার জানান, আজ ১৯ ডিসেম্বর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ৪৮ ঘণ্টার চেয়ে অনেক কম। শুক্রবার আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ আবহাওয়া আরও ২/৩ দিন থাকতে পারে। এর পর মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হবে।

তিনি জানান, হিমেল হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো শীত বৃষ্টি হচ্ছে। শীত নিবারণের জন্য গ্রামাঞ্চলের মানুষ খড়কুটো জড়ো করে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে আগুন পোহাচ্ছে। তিস্তা ও ধরলা নদীর চরাঞ্চলে ছিন্নমূল মানুষরা আরও কঠিন জীবনযাপন করছে।

সুমন চন্দ্র সরকার জানান, অতিরিক্ত ঠাণ্ডার হাত থেকে রেহাই করতে গরু-ছাগলের গায়ে ছেঁড়া কাঁথা ও চটের বস্তা তুলে দিয়েছে। বিশেষ করে এ এলাকার প্রায় সাড়ে ৬০০ গরুর খামারী চরম বিপাকে পড়েছেন। শীত থেকে বাঁচতে গ্রামাঞ্চলের মানুষ বিভিন্ন হাট-বাজারের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন।

শীতে বিশেষ কাজ ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বেড় হচ্ছে না। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুদের নিয়ে অনেক পরিবার বিপাকে পড়েছে। স্কুলগামী শিশুরা শীত মাথায় নিয়েই অতি কষ্টে চলাফেরা করছে। হাট-বাজারে মানুষের ভিড় কমে গেছে।

ছিন্নমূল মানুষ অর্থাভাবে শীতবস্ত্র কিনতে পারছে না। অনেকেই কিনতে এসে চড়া দাম হওয়ায় ঘরে ফিরে যাচ্ছেন। উপজেলার বয়-বৃদ্ধ মানুষ থেকে শুরু করে শীতার্ত মানুষ শীতবস্ত্রের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে জমায়েত হয়। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর তারা খালি হাতে ঘরে ফিরে যান।

তিস্তা নদীর বাঁধের ওপর বসবাসকারী জাবরা মণ্ডল (৮০), রমিতা বেওয়াসহ (৬৫) বেশ কয়েকজন শীতে কাঁপতে কাঁপতে বলেন, বাহে বেড়ার ফাঁক দিয়ে শীত হুর হুর করি ঢুকছে। জারত হাড্ডিগুলা কাঁপি উঠে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সজিবুল করিম জানান, এবারে ৪ হাজার ৭৪০ পিচ কম্বল বরাদ্দ এসেছে। এ সব কম্বল উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়েছে শীতার্তদের মাঝে বিতরণ করার জন্য। বৃহস্পতিবার রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহা. যোবায়ের হোসেন জানান, চাহিদার তুলনায় কম হওয়ায় শীতবস্ত্র আরও বরাদ্দের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।