হারিকেন আইডার তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড লুইজিয়ানা-মিসিসিপি-আলাবামা

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

হারিকেন আইডার তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে লুইজিয়ানা স্টেটের নিউঅর্লিন্স সিটি। সোমবার (৩০আগস্ট) স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৪ নম্বর ক্যাটাগরির হারিকেনে একটি বৃক্ষ ওপরে পড়ায় এক ব্যক্তির প্রাণহানী ঘটেছে। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে ১০ লক্ষাধিক গ্রাহকের বাড়ি, অফিস, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান। টানা ১৬ ঘণ্টা ১৫৫ মাইলের অধিক বেগে ধাবমান আইডা সোমবার ভোরে মৌসুমী ঝড়ো হাওয়ায় পরিণত হয়ে তা লুইজিয়ানার উপকূলিয় অঞ্চল হয়ে মিসিসিপির দিকে যাচ্ছে।

সোমবার সারাদিনই ঝড়ো হাওয়ার তাণ্ডব এবং ১২ ফুট থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের যন্ত্রণা এসব এলাকার অধিবাসীদের সইতে হবে বলেও আবহাওয়া দফতরের বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল পর্যন্ত লুইজিয়ানার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকাসহ মিসিসিপির উপকূলিয় অঞ্চল এবং আলাবামা স্টেটের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বিস্তীর্ণ এলাকা আইডার কবলে থাকবে।

এদিকে, লুইজিয়ানা স্টেটের কর্মকর্তারা চেষ্টা করছেন ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরূপনের জন্য। তবে তা বিপুল পরিমাণের হবে বলে ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির পক্ষ থেকে আশংকা করা হচ্ছে। ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের পূর্বাভাসে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, আইডার জলোচ্ছ্বাসের পরিধি টেনেসি এবং ওহাইয়ো স্টেটেও ছড়িয়ে পড়তে পারে বুধবার নাগাদ।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত নিউঅর্লিন্স সিটিতে বসবাসরত লুইজিয়ানা ট্র্যাঞ্জিট অথরিটির কমিশনার বাংলাদেশি আমেরিকান ড. মোস্তফা সারোয়ার বাদল সোমবার সকাল সাড়ে ৭টায় টেক্সট মেসেজে (কারণ ফোন, ইন্টারনেট কিছুই চালু নেই বিদ্যুৎ না থাকায়) এ সংবাদদাতাকে জানান, ‘শারীরিকভাবে অক্ষত রয়েছি। তবে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। বাসার আশপাশে আইডার তাণ্ডবে সবকিছু লণ্ডভণ্ড। সূর্যের আলো এখনও জনবসতির ক্ষত-বিক্ষত অবস্থা দেখার পরিবেশ তৈরী করতে সক্ষম হয়নি। আইডার তাণ্ডব সরে গেলেও ঝড়-বৃষ্টি চলছে। পানিতে সয়লাব রাস্তা-ঘাট, অনেক বাড়ির ছাদ উড়ে গেছে কিংবা ভেঙ্গে গেছে। আশপাশের বাংলাদেশীরাও অক্ষত রয়েছেন বলে জানতে পাচ্ছি।’ ধ্বংসযজ্ঞ অপসারণের পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে বেশ কদিন সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, করোনার তাণ্ডবের মধ্যেই হারিকেন আইডা আঘাত করলো লুইজিয়ানাসহ আশপাশের স্টেটসমূহে। তবে আগেই লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ায় প্রাণহানী রোধ করা সম্ভব হয়েছে বলে কর্মকর্তারা দাবি করছেন।

জানা গেছে, নিউঅর্লিন্স সিটির জরুরী কাজ অব্যাহত রাখা হয়েছে জেনারেটরের সাহায্যে। কারণ, বিদ্যুৎ সরবরাহের যে ৮টি ট্র্যান্সমিশন লাইন ছিল, সেগুলো অকার্যকর হয়ে পড়েছে ১৬ ঘণ্টা আগে আইডার প্রথম আঘাতেই। কর্মকর্তারা বলেছেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা পুনপ্রতিষ্ঠার পরই ক্ষয়-ক্ষতির বিস্তারিত বিবরণ সংগ্রহ এবং পুনরুদ্ধার কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে। ১৬ বছর আগে হারিকেন ক্যাটরিনার তাণ্ডবের পর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে তিন সপ্তাহ সময় লেগেছে বলেও উল্লেখ করেন কর্মকর্তারা। ক্যাটরিনায় ১৮০০ মানুষের প্রাণ ঝরেছিল।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন