হামলাকারীরা চিহ্নিত হয়েছে, ছাড় পাবেনা’ – নাসিরনগরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে হিন্দুদের ওপর হামলার ৯ দিন পর আজ ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

 

সেখানে এক সমাবেশে তিনি বলেন, হামলাকারীদের ‘সঠিকভাবে’ চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদেরকে কোন ছাড় দেয়া হবে না।

 

“হয়তো আমাদের কিছু সময় লাগছে। আমরা জজ মিয়া নাটক তৈরি করি না। তবে আমরা যাকে ধরি তাকে সঠিকভাবে ধরি এবং উপযুক্ত প্রমাণসহ ধরি। যারা যারা এগুলো করেছেন তাদের সবাইকে আমরা ধরবো” – বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

 

বিতর্কের মুখে থাকা স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হক ছাড়াও হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারাও এই সমাবেশে অংশ নেন।

 

মুসলমানদের পবিত্র কা’বাঘরের জন্য অবমাননাসূচক একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করার জেরে হিন্দুদের শতাধিক বাড়িঘর এবং দশটিরও বেশি মন্দিরে এই হামলা চালানো হয়।

 

মি. খান বলেন, ঐ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ৭৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ভিডিও ফুটেজ দেখে অনেককে শণাক্ত করা হয়েছে।

 

নাসিরনগরে পরিদর্শনের সময় মি. খান ছাড়াও তার সাথে পুলিশ ও র‍্যাবের প্রধান এবং ঢাকা থেকে আসা হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা অংশ নেন। নাসিরনগরে হামলার পর বিভিন্ন মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের মুখে থাকা স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হক।

 

তিনি বলেন, যারা হামলা চালিয়েছে তারা নাসিরনগরের কেউ নয়, তারা কারা সেটি খুজে বের করার আহ্বান জানান তিনি। সেই হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের একজন সৈকত দত্ত বলছিলেন, এখন তারা চাইছেন এধরণের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়।

 

“আজকে প্রশাসনের অনেকে ছিল যার কারণে মানুষের মধ্যে স্বাভাবিকতাটা হয়তো ফিরে আসবে। তাদের কথাবার্তা তো অনেক ভালোই লাগছে সবার।”

 

“আমরাতো বিশ্বাসের ওপরেই আছি। বিশ্বাস না করা ছাড়াতো আমাদের কোন উপায় নেই” – বলেন মি. দত্ত।

 

নাসিরনগরে সেই হামলার পর হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা এবং মানবাধিকার কমিশনের একটি প্রতিবেদনেও স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতাকে দায়ী করা হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় কয়েকজন সরকারী কর্মকর্তাকে সেখান থেকে সরিয়েও দেয়া হয়েছে।

 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সমাবেশের পর ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা আদেশ চন্দ্র দেব বলছিলেন, গত এক সপ্তাহে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে বলে তারা মনে করছেন।

 

“তাদের বক্তব্য এবং বিগত সাত দিনে তাদের কর্মকাণ্ডে আমরা আশাবাদী যে তারা প্রকৃত অপরাধীকে ধরার জন্য তারা যথেষ্ট সচেষ্ট”।

 

গত ৩০শে অক্টোবর ফেসবুকের একটি ছবিকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মনবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির এবং বাড়িঘরে হামলা চালায় একদল লোক। এর চারদিন পর সেখানকার কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনাও ঘটে।

 

ওই ছবি পোস্ট করার অভিযোগে ইতিমধ্যে রসরাজ নামে এক হিন্দু যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা