হাথুরুকে ঘোষণা দিয়েই লঙ্কা জয় করেছিলেন তামিম

২০১৮ সালের শুরুতেই দেশের মাটিতে বসেছিল ত্রিদেশীয় সিরিজ। জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে হওয়া সে টুর্নামেন্টের প্রথম পর্বে দাপটের সঙ্গেই খেলেছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। কিন্তু ফাইনালে হয়ে যায় লেজেগোবরে অবস্থা। বাজেভাবে হেরে বসে শ্রীলঙ্কার কাছে।

সেই সিরিজের দেড়-দুই মাস আগেই একপ্রকার বিনা নোটিশে বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তিনি হন শ্রীলঙ্কা দলের প্রধান কোচ। ফলে প্রাক্তন শিষ্যদের বিরুদ্ধে শিরোপা জিতে মানসিক প্রশান্তির দিক থেকে বেশি এগিয়ে যান হাথুরু।

যা নিয়ে খোঁচা মারতেও ভোলেননি তিনি। ফাইনালের পরদিন টিম হোটেলে তামিম ইকবালকে দেখে খোঁচাসুলভ হাসি দিলে, তামিমও জবাব দিয়ে দেন, তার (হাথুরুসিংহে) দেশে গিয়েই তার দলকে হারিয়ে আসবে বাংলাদেশ।

সত্যি হয়েছে তামিমের কথা! মার্চে শ্রীলঙ্কার মাটিতে হওয়া নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কা বিপক্ষে দুই ম্যাচেই জিতেছিল বাংলাদেশ। ফলে নিজেদের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত টুর্নামেন্টে প্রথম পর্ব থেকেই বাদ পড়তে হয় স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে।

হাথুরুর বিপক্ষে জয়ের ঘোষণা দিয়ে পরে ঠিক ঠিক সেই জয় তুলে নেয়ার গল্পটা শুনিয়েছেন তামিম ইকবাল নিজেই। রোববার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে করা লাইভ সেশনে উঠে আসে ২০১৮ সালের সেই ঘটনার কথাও।

তখন তামিম বলেন, ‘(ত্রিদেশীয়) ফাইনালে আমাদেরকে হারাল শ্রীলঙ্কা। পরদিন সকালে হোটেলে নাশতায় হাথুরুর সঙ্গে দেখা। আমাকে দেখে সে মুচকি হাসি দিয়ে তাকিয়ে ছিল। মারিও (ভিল্লাভারায়ন, বাংলাদেশ দলের তখনকার ট্রেনার) ছিল সেখানে। আমি গিয়ে বললাম, এত হেসো না, আমরা তোমাদের দেশে গিয়ে তোমাদের হারিয়ে আসব।’

যেই কথা সেই কাজ। নিদাহাস ট্রফিতে গিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ২১৫ রান তাড়া করে জেতে বাংলাদেশ। তামিমের ব্যাট থেকে আসে ২৯ বলে ৪৭ রান, মুশফিকুর রহীম খেলেন ৩৫ বলে ৭২ রানের অপরাজিত ইনিংস।

পরের ম্যাচের গল্প আরও সেরা। এবারও আগে ব্যাট করে ১৬০ রানের লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তামিমের ৫০ ও মুশফিকের ২৮ রানের পরেও খানিক ধুঁকছিল বাংলাদেশ। তবে ১৮ বলে ৪৩ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলে অবিস্মরণীয় জয় এনে দেন মাহমুদউল্লাহ।

সেই ম্যাচের শেষ ওভারে আম্পায়ারের একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্তকে ঘিরে মাঠে দেখা দেয় তুমুল উত্তেজনা। খেলাই বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয় একপর্যায়ে। তবে সেসব ছাপিয়ে খেলা শুরু হয় বেশ খানিক সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে।

তখন জয়ের জন্য দরকার ছিল ৪ বলে ১২ রান। ইসুরু উদানার প্রথম বলেই এক্সট্রা কভার দিয়ে চার মেরে দেন মাহমুদউল্লাহ। পরের বলে প্রাণপন দৌড়ে নেন আরও ২ রান। লক্ষ্যমাত্রা যখন ২ বলে ৬ রান, তখন চোখধাঁধানো ফ্লিক শটে বিশাল এক ছয়ের মারে জয় নিশ্চিত করেন মাহমুদউল্লাহ।

সেই ম্যাচের স্মৃতি মনে করে তিনি বলেন, ‘ঐ ম্যাচে ইসুরু উদানার বলে ওয়াইড ইয়র্কারে যে চারটি মেরেছি, ওটা শট না খেললে ওয়াইড হতো। অনেক বাইরে ছিল। টেস্টেও ওয়াইড হতো। তো ওটায় চার মেরে দেওয়ার পর মনে হচ্ছিল, উদানা আর ওয়াইড ইয়র্কার করবে না। এজন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম, যে মিডলে ইয়র্ক করতে পারে। জয়ের পর তো, বুঝতে পারছিলাম না কী করব। দারুণ এক রাত ছিল সেটি, অনেক মজা করেছিলাম আমরা।’

 

সুত্রঃ জাগো  নিউজ