বেইলি রোডে আগুন

হাতে ঘড়ি দেখে মিনহাজের মরদেহ শনাক্ত করলো পরিবার

ঘড়ি ও পেটে কাটা দাগের চিহ্ন দেখে বেইলি রোডের আগুনে প্রাণ হারানো মিনহাজ উদ্দিনের মরদেহ শনাক্ত করেছেন স্বজনরা। মিনহাজ উদ্দিন রাজধানীর বেসরকারি একটি আইটি প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যার প্রকৌশলী ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন। রাজধানীর বাসাবোতে বড় ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন তিনি। সদ্য লেখাপড়া শেষ করে চাকরিতে যুক্ত হয়েছিলেন।

শুক্রবার (১ মার্চ) ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের সামনে দেখা যায়, হৃদয়বিদারক চিত্র। মরদেহ নিতে এসে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন নিহত মিনহাজুল ইসলামের বাবা অলি উল্লাহ খান।

জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদিন তিনি কর্মস্থলে ছিলেন। সন্ধ্যায় কারওয়ান বাজারের অফিস শেষে বের হন তিনি। তবে এরপর আর ঘরে ফিরেননি। এরপর পরিবারের দুশ্চিন্তা বাড়ে। পরে এক বন্ধুর থেকে জানতে পারেন বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন মিনহাজ। এ ঘটনা জানার পর হাসপাতালে ছুটে আসেন পরিবারের সবাই। শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যাওয়ায় সঠিকভাবে মরদেহ শনাক্ত করতে পারছিলেন না তারা। পরে স্বজনেরা হাতঘড়ি ও পেটে একটি অস্ত্রোপচারের কাটা চিহ্ন দেখে মরদেহ শনাক্ত করেন।

হাতে ঘড়ি দেখে মিনহাজের মরদেহ শনাক্ত করলো পরিবার

 

মিনহাজের সহকর্মী আনিসুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিনহাজ তার এক বন্ধুর সঙ্গে কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁয় যান। রাত ১২টার পর মিনহাজের সঙ্গে খেতে যাওয়া তার ওই বন্ধু পরিবারে ফোন করে জানান, মিনহাজের সঙ্গে তিনি বিরিয়ানি খেতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বেইলি রোডের সেই রেস্তোরাঁয় আগুন লেগেছে। তিনি দোতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হয়ে বেরিয়ে এলেও মিনহাজ আটকা পড়েছেন।

মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন মিনহাজের বড় ভাই আমিনুল ইসলাম। তার মুখ থেকে কোনো কথা বের হচ্ছিল না। স্বজনেরা তাকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে তাঁরাও কান্নায় ভেঙে পড়েন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে আনিসুল ইসলাম বলেন, তিন ভাইয়ের মধ্যে মিনহাজ সবার ছোট। তার মা-বাবা চাঁদপুরে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। রাতে তাদের মিনহাজের বিষয়ে কোনো কিছু জানানো হয়নি। তবে আজ সকালে তারা কোনো মাধ্যমে মিনহাজের খবর জানতে পেরে হাসপাতালে ছুটে আসেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা তার হাতের ঘড়ি আর পেটের দাগ দেখে মরদেহ শনাক্ত করেছি। এখন ডিএনএ টেস্ট করতে দিয়েছে। রেজাল্ট এলে মরদেহ হস্তান্তর করবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।