স্মার্টকার্ড আসছে সেপ্টেম্বরে, ফেরত দিতে হবে আগেরটা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

নাগরিকের হাতে উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র (স্মার্টকার্ড) সেপ্টেম্বর মাসে তুলে দিতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্নও করা হয়েছে।

 

এর অংশ হিসেবে ঢাকার সব থানায় পাঠানো হচ্ছে এই কার্ড। কয়েকটি থানায় এরই মধ্যে স্মার্টকার্ড পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এখন শুধু প্রধানমন্ত্রীর সময় পেলেই নাগরিকদের হাতে এ কার্ড বিতরণের কাজ শুরু করবে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। ইসি সূত্রে এ সব তথ্য জানা যায়।

 

স্মার্টকার্ড বিতরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীন বলেন, ‘নাগরিকদের হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দেওয়ার কার্যক্রম আমরা এরই মধ্যে শুরু করার প্রক্রিয়া শেষ করেছি। আশা করি, সেপ্টেম্বরের যেকোনো দিন এটা বিতরণের কাজ শুরু করতে পারব। ঢাকা সিটির নাগরিকদের প্রথমে এ কার্ড দেওয়া হবে। পরবর্তীতে অন্যদের দেওয়া হবে।’

 

মহাপরিচালক বলেন, স্মার্টকার্ড নেওয়ার সময় নাগরিকদের হাতে থাকা লেমিনেটেড কার্ড ফেরত দিতে হবে। এ ছাড়া হাতের ১০ আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি নেওয়া হবে। এ জন্য এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় সংখ্যক মেশিন সংগ্রহ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, স্মার্টকার্ড হবে ১০ সংখ্যার, আগের মতো ১৩ কিংবা ১৬ ডিজিটের লম্বা লাইন থাকছে না।

 

স্মার্টকার্ডের প্রচার পত্রে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। সেগুলো হলো-

 

স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র যে কারণে প্রয়োজন : সেবা গ্রহণ ও প্রদানে সঠিক নাগরিক শনাক্তকরণ, সঠিক ব্যক্তির সঠিক সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা, আঙুলের ছাপের মাধ্যমে অফলাইন ভেরিফিকেশন সুবিধা।

 

স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রের বৈশিষ্ট্য: তিন স্তরে ২৫টির অধিক নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য, দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই, সহজে নকল করা সম্ভব নয়, বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন (Apps) চালানো সম্ভব, চিপ, ২ডি বারকোড, মেশিন রিডেবল জোন (এমআরজেড), নাগরিকের তথ্য চিপ-এ সংরক্ষণ করা।

 

স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রের উল্লেখযোগ্য ব্যবহার : আয়কর দাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) প্রাপ্তি, ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর প্রাপ্তি ও নবায়ন, পাসপোর্ট প্রাপ্তি ও নবায়ন, চাকরির জন্য আবেদন, স্থাবর সম্পত্তি ক্রয় ও বিক্রয়, ব্যাংক হিসেব খোলা ও ঋণ প্রাপ্তি, সরকারি বিভিন্ন ভাতা উত্তোলন, সরকারি ভর্তুকি, সাহায্য, সহায়তা প্রাপ্তি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, বিমান বন্দরে ই-গেট এর মাধ্যমে আগমন ও বহির্গমন সুবিধা, শেয়ার আবেদন ও বিও একাউন্ট খোলা, ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি, যানবাহন রেজিস্ট্রেশন, বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সংযোগ গ্রহণ, মোবাইল ও টেলিফোন সংযোগ গ্রহণ, বিভিন্ন ধরনের ই-টিকেটিং, সিকিউরড ওয়েব লগ ইন, ই-ফরম পূরণে নাগরিকের সঠিক ও নির্ভুল তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযোজন ইত্যাদি।

 

ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথমে ঢাকা সিটি করপোরেশন, জেলা-উপজেলা, পৌরসভা ও সবশেষে ইউনিয়ন পর্যায়ে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে। সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে ঢাকায় স্মার্টকার্ড বিতরণের পর দেশের অন্যান্য সিটি করপোরেশনগুলোতেও তা বিতরণ করা হবে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সব নাগরিতের হাতে (যারা ভোটার হয়েছেন) উন্নতমানের এ কার্ড পৌঁছে দেওয়া হবে। ঢাকায় প্রতিটি কাউন্সিল অফিস থেকে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে। পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকবে একটি ক্যাম্প। আর গ্রামের ভোটারদের ক্যাম্প থাকবে ইউনিয়ন পরিষদে।

 

ইসি কর্মকর্তারা জানান, বিশ্ব ব্যাংক সহায়তাপুষ্ট বাস্তবায়নাধীন ‘আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং এক্সেস টু সার্ভিস’ (আইডিইএ) প্রকল্পটি ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

 

ইসি সূত্র  জানায়, গত বছরের ১৪ জানুয়ারি ৯ কোটি স্মার্টকার্ড তৈরি করে দেওয়ার জন্য ফ্রান্সের অবার্থার টেকনলোজিস নামের একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে ইসি। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সব নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দেওয়ার কথা রয়েছে। দেশের প্রায় ১০ কোটি ভোটারের মধ্যে লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) রয়েছে  প্রায় ৯ কোটির হাতে।

সূত্র: এনটিভি