স্বামীর নাম, শিক্ষাগত যোগ্যতা পরিবর্তন করলেন মমতাজ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হওয়ার আগের দিন জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন হলো আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়া সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগমের।

তিনি স্বামীর নাম, নিজের ইংরেজি নাম ও শিক্ষাগত যোগ্যতা পরিবর্তন করেছেন। তবে স্বামীর নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তালাকনামাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেননি।

মঙ্গলবার এই সংশোধনের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

সংশোধনীর আগে জাতীয় পরিচয়পত্রে মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে মনোনয়ন পাওয়া মমতাজ বেগমের স্বামীর নাম ছিল মো. রমজান আলী। পরে তার স্বামীর নাম দেন  এ. এস. এম মঈন হাসান।

আর মমতাজের শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণির পরিবর্তে দশম শ্রেণি এবং ইংরেজি নাম MOMTAZ BEGUM-এর পরিবর্তে MOMTAZ BEGOM অনুমোদন দিয়েছে ইসি।

ইসির একটি নোটে বলা আছে, স্বামীর নাম সম্পূর্ণ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর আগের স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত কোনো কাগজাদি (যেমন তালাকনামা, স্বামীর এনআইডি কার্ডের কপি ইত্যাদি) সংযুক্ত করা হয়নি।

জাতীয় পরিচয়পত্র ও সংরক্ষিত তথ্য-উপাত্ত (সংশোধন, যাচাই ও সরবরাহ) প্রবিধানমালা-২০১৪ অনুযায়ী, বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এক বা একাধিক বৈধ প্রমাণ বিবেচনায় নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

সেগুলোর মধ্যে রয়েছে বিয়ের নিবন্ধনের সনদ, হিন্দু ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে বিয়ের নিবন্ধন না হয়ে থাকলে (উভয় পক্ষের) প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এফিডেভিট, সন্তানের শিক্ষা সনদ ও আইডি কার্ড, বিবাহ বিচ্ছেদ নিবন্ধন সনদ, স্বামী/স্ত্রীর মৃত্যু সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) এবং অন্য বৈধ প্রমাণাদি।

ইসির ওই নোটে বলা হয়, মমতাজের চাহিত ইংরেজি নামের বানান দাখিল করা পাসপোর্টে লিপিবদ্ধ নামের বানানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হলেও পাসপোর্টের কপিতে স্বামীর নাম (spouse name)-NA (প্রযোজ্য নয়) উল্লেখ রয়েছে। অন্যদিকে শিক্ষাগত যোগ্যতার স্বপক্ষে জয়মন্টপ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরিত প্রশংসাপত্র দাখিল করেছেন। পাশাপাশি তিনি বিয়ের সনদ দাখিল করেছেন এবং উক্ত সার্টিফিকেটে চাওয়া স্বামীর নামের মিল রয়েছে।

বর্ণিতাবস্থায় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুসারে আবেদনকারী ও সংসদ সদস্য বেগম মমতাজ বেগমের নিজ নাম (ইংরেজি), স্বামীর নাম ও শিক্ষাগত যোগ্যতা সংশোধনের জন্য নির্বাচন কমিশনের অনুমোদনের জন্য নথি উপস্থাপন করা হলে, তা অনুমোদন দেয় ইসি।

২৬ নভেম্বর মমতাজের আবেদনে স্বাক্ষর করেন ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম, পরিচালক (অপারেশন্স), উপপরিচালক, বৈধ ও সঠিকতা যাচাইকরণের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ সরওয়ার হোসেন। ২৭ নভেম্বর স্বাক্ষর করেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, কবিতা খানম, মো. রফিকুর ইসলাম ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।

তালাকনামা, স্বামীর এনআইনডি কার্ডসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে পারেননি সাংসদ মমতাজ বেগম। এগুলো ছাড়া তিনি আইডি কার্ড পেতে পারেন কি না জানতে চাইলে কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, যে স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছে, সেই স্বামীর আইডি কার্ড দেওয়ার ক্ষমতা আছে কোনো বউয়ের?

তবে এর আগে ২৩ অক্টোবর জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সহকারী পরিচালক (মানবসম্পদ ও প্রশিক্ষণ) মোছাম্মৎ সিরাজুম মনিরা চৌধুরী সই করা চিঠিতে বলা হয়, তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্র সেবাসংক্রান্ত সব কার্যক্রম (অন্তর্ভুক্তি, সংশোধন ও স্থানান্তর) বন্ধ থাকবে।