স্বরূপে ফেরার ইঙ্গিত ফিজের

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

বল হাতে ‘অচেনা’ মোস্তাফিজুর রহমান। নিজেকে খুঁজে ফিরছেন। জাতীয় দলের পর বঙ্গবন্ধু বিপিএলেও বিবর্ণ বাঁহাতি পেসার। তবে সবশেষ ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে দারুণ বোলিং করেছেন। স্বরূপে ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন কাটার মাস্টার।

সময়টা ভালো যাচ্ছে না মোস্তাফিজের। নিজেকে ফিরে পেতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন। তবে ক্রিকেটবিধাতা যেন তুষ্ট নন! তাইতো ছন্দহীন বাঁহাতি পেসার। রংপুর রেঞ্জার্সের হয়ে খেলা মোস্তাফিজ বঙ্গবন্ধু বিপিএলে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স দেখাতে পারেননি। কোনো ম্যাচে উইকেট পেয়েছেন আবার কোনো ম্যাচে পাননি। তবে রান দিয়েছেন উদারহস্তে। প্রথম ম্যাচে ৪ ওভারে ৩৭ রানে ২ উইকেট পান। ইকোনমি ৯.২৫। দ্বিতীয় ম্যাচে ২১ রান দিলেও ছিলেন উইকেটশূন্য। তৃতীয় ম্যাচে ৩৫ রানে ১ উইকেট শিকার করেন। চতুর্থ ম্যাচে ২ ওভারে ১৮ রানে ১ উইকেট। তবে চট্টগ্রাম ম্যাচে আগের ফিজকে দেখা গেছে! বল হাতে বেশ কার্যকর ছিলেন। ৫.৭৫ ইকোনমিতে ২৩ রানে ২ উইকেট পেয়েছেন। তার শিকার ওপেনার সিমন্স ও মুক্তার আলি।

বাঁ কাধের সøাপে অস্ত্রোপচার করার পর থেকেই পারফরম্যান্স গ্রাফটা ওঠা-নামা শুরু। অথচ জাতীয় দলে গুরুত্বপূর্ণ একজন খেলোয়াড় হিসেবেই বিবেচিত মোস্তাফিজ। তার কাছে প্রত্যাশা অনেক। বিপিএলের মতো আসরও মাতিয়েছেন তিনি। তার সেরা অস্ত্র কাটার। মালিঙ্গার কাছ থেকে শিখেছেন ইয়র্কার! স্লোয়ারটাও বেশ ভালোই মারেন। তবে কাটার, স্লোয়ার, ইয়র্কারে যেন ‘মরচে’ ধরেছে। প্রতিপক্ষ দলের ব্যাটসম্যানের কাছে কোনো অস্ত্রই যেন আগের মতো ভীতি ছড়াচ্ছে না। খুব সহজেই তার বল খেলতে পারছেন ব্যাটসম্যানরা। স্নায়ুচাপে নার্ভ ধরে রাখতেও ব্যর্থ মোস্তাফিজ। লাইন-লেংথ হারিয়ে খুঁজছেন। বোলিংয়েও নেই ভেরিয়েশন। জাতীয় দলে ধূমকেতুর মতো আর্বিভাব হওয়া এই পেসার মুদ্রার অপরপিঠও বেশ ভালোভাবেই দেখে ফেলেছেন। দলে থাকলেও ভারতের বিপক্ষে টেস্টে একাদশে জায়গা পাননি। তার পারফরম্যান্সে তুষ্ট হতে পারছেন না দর্শকরা; বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও। জাতীয় দলের নির্বাচক ও বিপিএলে রংপুর রেঞ্জার্সের টেকনিক্যাল পরামর্শক হাবিবুল বাশার সুমন মোস্তাফিজের বোলিংয়ে হতাশ। তার উন্নতির চেষ্টা না দেখে বিরক্তিও প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘আমাদের মূল ডেথ বোলার ফিজ। সে যদি খরুচে বোলিং করে, তা হলে পুরো দলের ওপরই চাপ চলে আসে; সে স্পেশাল বোলার। এজন্যই চাওয়াটা একটু বেশি থাকে।’

এই বছর বাংলাদেশের হয়ে ৭ টি-টোয়েন্টিতে কেবল ৪টি উইকেট নিয়েছেন। ওভারপ্রতি প্রায় ৯ রান করে দিয়েছেন। তার বোলিংয়ে কার্যকারিতা ততটা নেই। সবশেষ ভারত সফরে টি- টোয়েন্টি সিরিজে ছিলেন উইকেটশূন্য। শ্রীহীন বোলিংয়ে হতাশ মোস্তাফিজ নিজেও। বাঁহাতি পেসারের বিশ্বাস স্বরূপে ফিরবেন। জানিয়েছেন, পরিশ্রম করছেন।

এদিকে দুঃসময়ে মোস্তাফিজ পাশে পেয়েছেন জাতীয় দলের সতীর্থ মুশফিকুর রহিমকে। তিনি বলেছেন, ‘সে এখনো আমার কাছে চ্যাম্পিয়ন বোলার। হয়তো আমি অধিনায়ক নই, যদি আমাকে বলেনÑ বাংলাদেশের এক ওভারে ৪ রান লাগে (আসলে ঠেকানো) আমি ওকেই বল দেব সবার আগে, ও ফর্মে থাক আর না থাক।’

বঙ্গবন্ধু বিপিএলে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারি বোলারের তালিকায় ছয়ে আছেন মোস্তাফিজ। রংপুর রেঞ্জার্সের পেসার ৫ ম্যাচে ৭.৭৩ ইকোনমিতে ৬ উইকেট পেয়েছেন। তালিকার সেরা তিনে আছেন চট্টগ্রামের মেহেদী হাসান রানা (৫ ম্যাচে ১৩), রুবেল হোসেন (৬ ম্যাচে ৮) এবং কুমিল্লার সৌম্য সরকার (৪ ম্যাচে ৭)।