স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বতন্ত্র বিভাগ চায় পুলিশ

সিল্কসিটি নিউজ ডেক্স:
‘দক্ষ পুলিশ, সমৃদ্ধ দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ স্লোগানে আজ শুরু হচ্ছে ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০২২’। এবারের সপ্তাহে পুলিশের প্রধান দাবি হচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বতন্ত্র বিভাগ বা অধিদপ্তর গঠন করা। এছাড়া অন্য দাবির মধ্যে রয়েছে-সুপারনিউমারারি পদসংখ্যা বৃদ্ধি, জনবল বাড়ানো, সব সদস্যের জন্য বিশেষ ভাতা চালু, উন্নত অস্ত্রসহ অত্যাধুনিক সরঞ্জাম সরবরাহ, ক্যাডার কর্মকর্তাদের ঝুঁকিভাতা দেওয়া, গাড়ির সংখ্যা বাড়ানো, আবাসন সংকট সমাধান ও পুলিশপ্রধানের আর্থিক ব্যয়ের ক্ষমতা বাড়ানো।

আইজিপির পদটি সিনিয়র সচিব পদমর্যাদার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবও একই পদমর্যাদার। পুলিশের ছুটি, বদলির মতো কাজগুলো এখন জননিরাপত্তা বিভাগের মাধ্যমেই করা হয়। পুলিশের চাওয়া-এসব কাজ আইজিপির মাধ্যমেই করা হোক। এ কারণে পৃথক বিভাগ বা অধিদপ্তর গঠনের দাবি উঠছে পুলিশের পক্ষ থেকে। ওই কর্মকর্তা জানান, পুলিশপ্রধানের তিন কোটি টাকা ব্যয় করার ক্ষমতা রয়েছে। এটি ৫০ কোটি টাকা করার দাবি জানানো হতে পারে।

এদিকে পুলিশ সপ্তাহে শৃঙ্খলা ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে কর্মকর্তাদের কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ। এসপি ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের নিয়ে শনিবার বিকালে পুলিশ সদর দপ্তরে বৈঠক করেন তিনি। এ সময় আরও বক্তব্য দেন ডিআইজি (লজিস্টিক) তৌফিক মাহবুব, ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের প্রধান মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত আইজিপি ড. মইনুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ। বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা আইজিপির বক্তব্যের বরাত দিয়ে বলেন, মাস্ক পরা থেকে শুরু করে ইউনিফর্ম-কোনো কিছুতেই শৃঙ্খলার ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা কঠোরভাবে মনিটরিং করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিন আজ সকাল ১০টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে বার্ষিক পুলিশ প্যারেড অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় দিনের (সোমবার) কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শিল্ড প্যারেডের ফাইন প্রতিযোগিতা, প্রীতিভোজ, সন্ধ্যায় অবসরপ্রাপ্ত ও বর্তমান কর্মকর্তাদের পুনর্মিলনী।

তৃতীয় দিন (মঙ্গলবার) সকালে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এদিন বিকালে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির সম্মেলন এবং সন্ধ্যায় ভার্চুয়ালি ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি।

২৬ জানুয়ারি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইজিপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। পুলিশ সপ্তাহের শেষদিন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রীর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এদিন বিকালে উচ্চপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সম্মেলনের মাধ্যমে সপ্তাহের কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদের দরবার এবার করোনার কারণে বাতিল করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় পুলিশের দাবিগুলো প্রধানমন্ত্রীকে লিখিতভাবে জানানো হবে। এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন দাবিদাওয়া উপস্থাপন করা হবে।

পুলিশ সপ্তাহের অন্যতম আকর্ষণ হলো বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এবং রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) প্রদান। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর পুলিশ সপ্তাহ উদযাপন না হওয়ায় এবার ২০২০ ও ২১ সালের বিপিএম-পিপিএম পদক একসঙ্গে দেওয়া হবে। মোট ২৩০ পুলিশ কর্মকর্তা বিপিএম ও পিপিএম পদক পাচ্ছেন।

প্রতিবছর প্রধানমন্ত্রী এ পদক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রদান করেন। এবার প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পদক তুলে দেবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।