স্ত্রীকে নির্যাতন করে মার খেয়েছেন হিরো আলম, গ্রেপ্তার!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বগুড়ার বহুল আলোচিত আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম পরকীয়া প্রেমে বাধা পেয়ে স্ত্রী সাদিয়া বেগম সুমিকে মারপিট করে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পরে রাত ১০ টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

স্ত্রী সুমি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি এবং হিরো আলম প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনায় হিরো বুধবার সকালে ও তার শ্বশুর সাইফুল ইসলাম দুপুরে সদর থানায় পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এর সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান জানান, অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করতে দুপক্ষকে রাতে থানায় ডাকা হয়েছে।

হিরো আলম অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, স্ত্রীর সঙ্গে দাম্পত্য কলহের জের ধরে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে শ্বশুর সাইফুল ইসলাম ও স্ত্রী সাদিয়া বেগম সুমির নেতৃত্বে ৪-৫ জন তার ওপর চড়াও হয়ে কাঠের বাটাম দিয়ে মারপিট করেন। পরে তিনি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি বুধবার সকালে সদর থানায় স্ত্রী, শ্বশুরসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে তার বাড়িতে গিয়ে হামলা, মারপিট ও টাকা নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেন।

সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, যৌতুকের কারণে হিরো আলম মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে তার মেয়ে সুমিকে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। খবর পেয়ে তিনি তার মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। এ ব্যাপারে তিনি বুধবার দুপুরে সদর থানায় হিরো আলমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, যৌতুক না পেয়ে তার মেয়েকে মারপিট করা হয়েছে। তবে তিনি জামাই হিরো আলমকে মারপিট করার অভিযোগ দৃঢ়তার সঙ্গে অস্বীকার করেছেন।

শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাদিয়া বেগম সুমি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, দুই মাস পর গত সোমবার রাতে হিরো আলম বগুড়া শহরতলির এরুলিয়া গ্রামের বাড়িতে আসেন। রাতে বিছানায় শুয়ে দীর্ঘ সময় ঢাকায় এ নারীর সঙ্গে কথা বলেন। এর প্রতিবাদ করলে হিরো আলম ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বেদম মারপিট করেন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, শুনেছেন হিরো ঢাকায় দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। এ কারণে তিনি স্ত্রী-সন্তানের খোঁজ রাখেন না এবং সংসারের খরচ দেন না। এ প্রসঙ্গে কথা বললেই তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। হাসপাতালে সাংবাদিক আসার খবরে সুমি ভালো পোশাক পরে দুই সন্তানকে নিয়ে ছবি তোলার অনুমতি দেন।

বুধবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত হিরো আলমের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তাকে এরুলিয়া বাজার এলাকায় বাড়ি ও অফিসে গিয়েও পাওয়া যায়নি। ফলে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার এসআই আবদুর রহিম জানান, হিরো আলম থানায় এসে অভিযোগ করেন, পারিবারিক কলহে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে লাঞ্ছিত, মারপিট ও ঘর থেকে টাকা নিয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে তিনি স্ত্রী, শ্বশুরসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, পরে জানতে পারেন মারপিটে আহত হয়ে তার স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, জামাই হিরো বাড়িতে এসে যৌতুকের কারণে তার মেয়েকে মারপিট করেছেন।

সদর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান জানান, হিরো আলম ও তার শ্বশুর সাইফুল ইসলামের পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুপক্ষকে বুধবার রাত ৮টার দিকে ডাকা হয়েছে। তাদের কথা শোনার পর রাত ১০ টার দিকে হিরো আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।