সেনাবাহিনী যেভাবে পাকিস্তানকে জিহাদি পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত করেছে

পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর জেনারেলরা কিভাবে তাদের দেশকে আন্তর্জাতিক জিহাদি পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত করেছেন, সে ব্যাপারে নিজের বইয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করেছেন লেখক মুহাম্মদ হানিফ। অ্যা কেস অব এক্সপ্লোডিং ম্যাঙ্গোস (২০০৮) বইতে এ ব্যাপারে লিখেছেন পাকিস্তানের এই লেখক।

মুহাম্মদ হানিফ লিখেছেন, রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি নিজেদের মধ্যকার চিন্তাবিদদের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে অস্বীকার করার ব্যাপারে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইতিহাস রয়েছে।

১৯৭৭ সালে জেনারেল জিয়া-উল-হকের বিনা রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের ব্যাপারে তিনি লিখেছেন, তার শাসনামলে পাকিস্তানে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র, হেরোইন এবং সাম্প্রদায়িকতা ঢুকে পড়েছে। এসবের সঙ্গে যারা জড়িয়েছিল, তাদের ভাগ্যও খুলেছিল সে সময়। এভাবেই আন্তর্জাতিক জিহাদি পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে পাকিস্তান।

মুহাম্মদ হানিফ জানান, পাকিস্তান সেনাবাহিনী কখনো ইতিহাসবিদদের কথায় কান দেয়নি এবং কখনো কখনো ধর্মীয় পণ্ডিতদেরও এড়িয়ে গেছে।

হানিফ লিখেছেন, পাকিস্তানের সমাজ নানাভাবে বিভক্ত। একে অন্যের সঙ্গে মতের মিল না থাকলেও জেনারেল জিয়া-উল হকের অভ্যুত্থান যে ভুল ছিল, সে ব্যাপারে তাদের একমত হতে হবে।

তিনি বলেন, সফল সেনা কম্যান্ডাররা বহু বই পড়লেও এবং নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ে কৌশলগত পড়াশোনা করলেও এ ব্যাপারে ধারণা রাখেন না যে, জেনারেল জিয়া-উল হকের সময় যে মাল্টি-ন্যাশনাল ও মাল্টি-কালচারাল জিহাদি প্রজেক্ট শুরু হয়েছে, তা ভুল ছিল।

তিনি আরো লিখেছেন, জিয়ার সময়ে ফিরে তাকালে দেখা যায়, পাকিস্তান সেনাবাহিনী মনে হয় এমন এক পৌরাণিক দানবগুলোর মধ্যে একটি, যারা নিজের মাথা কেটে ফেলার পর অভিন্নভাবে বাড়তে থাকে।

তিনি আরো লিখেছেন, সেনাবাহিনী এবং সে দেশের গণমাধ্যমে পাকিস্তানের ইমেজ এমনভাবে তুলে ধরা হয় যেন, সে দেশ দীর্ঘদিন ধরে গুরুতর অবস্থায় ভুগছে না। বিষয়টি যেন হালকা ব্রন বের হওয়ার মতে। যেন তাতে একটু স্নো মেখে নিলেই সেরে যাবে।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ