বিতর্কিত সেই মোটর শ্রমিক ও আ.লীগ নেতা মাহাতাবকে শোকজ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
কখনো মাদক ব্যবসায়ীকে আবার কখনো জুয়াড়িকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনতে গিয়ে পুলিশের হাতে লাঞ্চিত হয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছেন। কখনো নিজের স্বার্থের জন্য বাস ধর্মঘট ডেকে নিজের ক্ষমতার দাপট দেখানোর চেষ্টা করেছেন। আবার কখনো কবরস্থান থেকে গাছ কেটে নিয়েও হয়েছে সংবাদের শিরোনাম। কখনো আরাম-আয়েশ করতে গিয়ে প্রকাশ্যে দলীয় কর্মীকে দিয়ে পা টিপে নিয়ে হয়েছেন খবরের শিরোনাম।

  • সেই বিতর্কত আওয়ামী লীগ নেতা ও রাজশাহী মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহাতাব হোসেনকে এবার দল থেকে শোকজ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কেন তাকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হবে না-তা সাত দিনের মধ্যে জানতে চাওয়া হয়েছে। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শনিবার দুপুরে ওই শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে মাহাতাবের কাছে।

বিষয়টি স্বীকার করেছেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি সিল্কসিটি নিউজকে শনিবার রাতে জানান, মাহাতাবকে নানা কারণে শোকজ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাকে সাতদিনের মধ্যে কেন স্থায়ীভাবে দল থেকে বহিস্কার করা হবে না-তা জানতে চাওয়া হয়েছে।এর বাইরে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা লিটন।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের দায়ীত্বশীল একাধিক সূত্র নিশ্চিত সিল্কসিটি নিউজকে নিশ্চিত করেছে, রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন শ্রমিক নেতার আড়ালে মহানগর আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে বাসস্ট্যান্ডজুড়ে দাপট দেখিয়ে চলেন। তিনি এবং মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কামাল হোসেন রবি দুজনের ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করার জন্য কথায় কথায় রাজশাহী একের পর এক বাস ধর্মঘট আহ্বান করেন। তাঁদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হতে হয় সাধারণ যাত্রীদের।

  • এবার ঈদের এক সপ্তাহ আগেও এই মাহাতাবের কারণে রাজশাহীতে বাস ধর্মঘট পালন করে শ্রমিকরা। আবার গত মঙ্গলবার সকাল থেকে হঠাৎ করে বাস ধর্মঘট আহবান করা হয়। নাটোরের বাস থেকে জোরপূর্বক চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় মাহাতাব বাস ধর্মঘট আহবান করেন। পরে টানা দুইদিন যাত্রীদের ভোগান্তি শেষে প্রশাসনের চাপেরমুখে পরের দিন বুধবার সন্ধ্যার দিকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন মাহাতাব।

এছাড়াও দলীয় প্রভাব দেখিয়ে রাজশাহী বাবসটার্মিনাল ঘিরে তিনি গড়ে তুলেন জুয়ার আসর। এসব জুয়ার আসর থেকে পুলিশ একাধিবার জুয়াড়িকে ধরে নিয়েও যান। পরে মাহাতাব তদবির করে সেইসব জুয়াড়িদের ছাড়িয়ে নেন। এ নিয়ে পুলিশের হাতে দুই দুইবার লাঞ্চিত হয়ে পরে বাস ধর্মঘট ডাকেন মাহাতাব। আবার নিজের ক্ষমতা জাহির করতে তিনি দলীয় কর্মীদের দিয়ে প্রকাশে পা টিপেও নেন।

গত ১৬ জুলাই সিল্কসিটি নিউজের খবরে মাহাতাবের পা টিপে নেওয়া দৃশ্যসহ খবর প্রকাশ হয়। এ নিয়ে মাহাতাব দেখে নেওয়ারও হুমকি দেন।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রগুলো আরো নিশ্চিত করেছে, মাহাতাবের এসব অপকর্মের কারণে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি প্রশাসনের কাছে ক্ষুন্ন হচ্ছে বলেই বিষয়গুলো নিয়ে তাঁকে কারণ দর্শাতে বলা হয়।

  • গত শুক্রবার বিকেলে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের উপস্থিতিতে সভা করে মাহাতাবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী গতকাল শনিবার দুপুরে শোকজ নোটিশ মাহাতাবের কাছে পাঠানো হয়।

তবে কারণ দর্শানোর নোটিশ সম্পর্কে জানতে কাউন্সিলর মাহাতাবের ফোনে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

 

স/আর