সারারাত শিশুকে আটকে বলাৎকার, যুবক গ্রেপ্তার

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার রামকৃষ্টপুর-মাঝপাড়ার তেঁতুলতলার একটি বাড়ি থেকে বাক্স বন্দী এক শিশুকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। ১০ বছর বয়সী ওই শিশু স্থানীয় একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র।

সোমবার (২৫ মার্চ) এশার নামাজের পর থেকে ওই শিশু নিখোঁজ হলে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে সদর মডেল থানা পুলিশ শিশুটিকে একই এলাকার এক যুবকের ঘর থেকে উদ্ধার করে। পরে সারারাত নিজ ঘরের মধ্যে আটকে রেখে বলাৎকারের অভিযোগে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত যুবক চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার তেঁতুলতলা মহল্লার সাহালাল আলীর ছেলে সুমন আলী ইমন (২১)।

ভুক্তভোগী শিশুর মা বলেন, সোমবার রাতে নামাজ পড়ে এসে হঠাৎ বাড়ির বাইরে চলে যায় আমার ছেলে। এরপর অনেক রাত হয়ে গেলেও আর বাসায় না ফিরলে খোঁজাখুজি শুরু করি। আত্মীয় স্বজন, মসজিদ এমনকি সে যে মাদ্রাসায় পড়ে সেখানে সন্ধান করে তাকে পাওয়া যায়নি। এরই ভেতর নিখোঁজ সংবাদ জানাতে মাইকিং করা হয় মসজিদের মাইক থেকে।

এ সময় এলাকার কয়েকজন ইমনের সাথে যাওয়ার কথা বললে রাতেই কয়েক দফা নিজেরা এমনকি পুলিশ নিয়ে বাড়ি খুঁজলেও ছেলেকে আমার বের করেনি তারা। পরে মঙ্গলবার সকালে আবার পুলিশ নিয়ে গেলে আমার ছেলেকে ইমনের ঘরের ভেতরে থাকা একটি বাক্সের ভেতর থেকে বের করে দেয় ইমনের পরিবার।

তিনি আরও বলেন, সারারাত ছেলের জন্য ছোটাছুটি করেছি। কিন্তু ছেলে বের করে দেয়নি। আমার ছেলেকে বাক্সের মধ্যে ভরে রেখেছিল। এছাড়াও সারারাত শারীরিক নির্যাতনের পর সকালে ফেরত দেয়া হয় আমার ছেলেকে। আমি এর উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।

শিশুর দাদি জানান, গত কয়েকদিন থেকেই সাহলালের ছেলে ইমনের সাথে মিশছে আমার নাতি। তাকে পটকা দেয়ার নাম করে এশার নামাজের পর বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায় ইমন। এলাকাবাসীসহ আমরা যখন বারবার তাদের বাসায় খুঁজতে যখন যায় তখন বাক্সের মধ্যে ভরে লুকিয়ে রেখেছিল। পরে বাধ্য হয়েই সকালে নাতিকে আমার নিজেরাই বের করে দেয় থানা পুলিশের ভয়ে।

ইমনের মা বলেন, ওই শিশুকে ইমন বাসায় এনেছিল তা আমরাও জানতাম না। রাতে আমরা কয়েক দফায় তার ঘরে খুঁজতে গেলেও তাকে পাইনি। এমনকি শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হলে পুলিশকে সাথে নিয়ে তারা রাত ২টার দিকে আবারও ইমনের ঘর তল্লাশি করে পাইনি শিশুকে। কারণ ওই শিশু নিজে থেকেই বাক্সের মধ্যে লুকিয়ে ছিল।

ইমনের পরিবারের দাবি, জোর করে নয় স্বেচ্ছায় এসে ঘরের মধ্যে সারারাত ছিল ওই শিশু। মা-দাদির মার খাওয়ার ভয়ে বাইরে আসেনি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু রহমান জানান, প্রাথমিক তদন্তে বলৎকারের সত্যতা পাওয়া গেছে। রাতে বাসায় নিয়ে আসার পর শিশুকে বলৎকার করেছে ইমন। পরে পুলিশ ও তার পরিবার ঘরে খুঁজতে গেলে দুইজন মিলে পরামর্শ করে বাক্সে লুকিয়ে থাকে। প্রাথমিকভাবে বলৎকারের উদ্দেশ্যই নিয়ে যাওয়ার কথা জানা গেছে।

তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত কাজ শুরু করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় শিশু ধর্ষণ আইনে মামলা দায়ের করেছেন ওই শিশুর মা। আটককৃত ইমনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে পুলিশ।