সাপাহারে কোরবানির পশুর হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ

সাপাহার প্রতিনিধি: আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে সকল নিয়মনীতি উপেক্ষা করে নওগাঁর সাপাহার পশুর হাটগুলোতে সংশ্লিষ্ট ইজারাদারদের দৌরাত্ম বেড়ে চলেছে। উপজেলাল হাটগুলোতে গবাদী পশুর ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের নিকট থেকেই অস্বাভাবিক হারে টোল আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, কিন্তু অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধে নেই প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ। অন্যদিকে প্রশাসন বলছে, এ পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি, তাই ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

গত বৃহস্পতিবার উপজেলার সীমান্তবর্তী মিরাপাড়া দিঘীর হাট ও শনিবার সাপাহার উপজেলা সদরের বিশাল হাটের দু’টিতেই প্রতিটি গরু মহিষের জন্য সরকার নির্ধারিত টোলের পরিবর্তে ৫০০ টাকা এবং পশু বিক্রেতার নিকট থেকে কোন অর্থ নেয়ার নিয়ম না থাকলেও প্রতি পশু বিক্রেতার নিকট থেকে ২০ টাকা করে টোল আদায় করা হয়েছে। এছাড়া শতকরা ১০টাকা হারে প্রতিটি ছাগল ভেড়ার জন্য সর্বোচ্চ ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত টোল আদায় করতে দেখা গেছে। গরু বা মহিষ যত টাকা দামেই কেনা হোক না কেন প্রতিটির পশুর জন্য ৫২০টাকা টোল আদায় করা হলেও মাত্র ১০/১২ হাজার টাকা মুল্যের একটি ছাগলের জন্য জোরপূর্বক ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত টোল নেয়া হয়। এক লক্ষ টাকা মূল্যের গরুর টোল ৫০০ টাকা হলেও ১২ হাজার টাকা মূল্যের একটি খাসির টোল ১২০০ টাকা বিষয়টি সাধারণ জনগণকে বেশ ভাবিয়ে তুলেছে।

সরকারিভাবে নির্ধারিত টোলের কয়েক গুন বেশী টোল এই হাটগুলোতে আদায় করা হলেও তা বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এছাড়া প্রতিটি পশুর হাটের প্রবেশ পথে সরকারী নিয়ম অনুযায়ী গবাদী পশুর টোল আদায়ের তালিকা টাঙ্গানোর কথা থাকলেও এখনো তা টাঙ্গানো হয়নি।

প্রতি হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়কে কেন্দ্র করে গবাদী পশুর ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সাথে ইজারাদারের লোকজনের প্রায় বাকবিতন্ডা লেগেই থাকে। শনিবার উপজেলা সদরের গবাদীপশুর হাটে আগত কোরবানীর পশু ক্রেতা উপজেলার কাশিতাড়ার আরিফ মন্ডল, লালচান্দা গ্রামের মোকসেদুল, রামরামপুরের মজিবর রহমান, পিছলডাঙ্গার মমিনুলসহ একাধিক ভুক্তভোগী উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, এই দুটি হাটে ইজারাদাররা দীর্ঘদিন থেকে অতিরিক্ত টোল আদায় করে আসছে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন অবগত থাকা সত্বেও প্রতিহত না করে রহস্যজনকভাবে নিরবতা পালন করে চলেছে।

ভুক্তভোগীরা যাতে ইজারাদারের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ কাগজে কলমে প্রমাণ করতে না পারে সে জন্য ক্রেতার নিকট দেয়া পশুর ছাড়পত্র রশিদে পশুর দাম উল্লেখ থাকলেও টোলের টাকার পরিমাণ লেখা হয়না।

এ বিষয়ে সাপাহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার কল্যাণ চৌধুরী’র সাথে কথা হলে তিনি জানান, হাটগুলোতে যাতে অতিরিক্ত টোল আদায় ও ক্রেতা বিক্রেতাদের হয়রানী করা না হয় এজন্য সংশ্লিষ্ট ইজারাদারগণকে আগেই হুশিয়ারী করা হয়েছিল। কিন্তু এ পর্যন্ত ভুক্তভোগী কোন ক্রেতা অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়ে তার নিকট কোন অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আগামী হাটগুলোতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে জানান তিনি।

স/শা