সাইবার অপরাধের বেশি শিকার হচ্ছেন কিশোরী-তরুণীরা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

দেশে সাইবার অপরাধের আখড়া হয়ে উঠছে সামাজিক মাধ্যমে। আর এতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী মেয়েরা। প্রতিকারের উপায় নিয়ে স্বচ্ছ ধারণার অভাব এবং লোকলজ্জা ও ভয়ভীতির কারণে সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণনের বাইরে যেতে পারে বলেও গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে আসে।

’দেশে সাইবার অপরাধের প্রবণতা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন এটি প্রস্তুত করে। এটি উপস্থাপন করেন সংগঠনের আহবায়ক কাজী মুস্তাফিজ।

কাজী মুস্তাফিজ জানান, দেশে সাইবার অপরাধ বা প্রযুক্তির নিরাপদ ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন। তাদেরই পরিচালনায় এ গবেষণায় আরো বলা হয় যে, সাইবার ক্রাইমে হয়রানির শিকার হলেও ভুক্তভোগীদের ৩০ভাগই কিভাবে আইনী ব্যবস্থা নিতে হয় তা তারা জানেন না। বাকীদের মধ্যে ২৫ ভাগই আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ করে লাভ হবে না ভেবে অভিযোগ করেন না।

জরিপে দেখা গেছে, জেলাভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেশে সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছে ভুক্তভোগীদের ৫১.১৩ শতাংশ নারী এবং ৪৮.৮৭ শতাংশ পুরুষ।

অ্যাকাউন্ট জাল ও হ্যাক করে তথ্য চুরির মাধ্যমে অনলাইনে সবচেয়ে বেশি অপনিরাপদ দেশের নারীরা। গড়ে অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া একাউন্টে অপপ্রচারে শিকার হন ১৪.২৯ ভাগ নারী। একই ধরণের অপরাধের শিকার হন ১২,৭৮ পুরুষ। অবশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আইডি হ্যাকিং আ তথ্য চুরির শিকার নারী-পুরুষের অনুপাতে পুরুষের অবস্থান দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। এক্ষেত্রে ১৩.৫৩ ভাগ পুরুষ আক্রান্ত হলেও নারী আক্রান্তের হার ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। অপরাধের ধরণে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ছবি বিকৃতির মাধ্যমে অনলাইনে অপপ্রচারে নারী-পুরুষের এ অনুপাত অনেকাংশে উল্টো বলা চলে। এ অপরাধে আক্রান্ত নারীর হার ১২ দশমিক তিন হলেও পুরষের বেলায় তা ৩ দশমিক ৭৬ ভাগ। অনলাইনে হুমকিসহ বার্তা প্রাপ্তির হার নারী ৯.৭৭ ভাগ আর ভুক্তভোগী ৩.৭৬।

তবে ব্যাপক সচেতনতা অবলম্বন করা গেলে ৭৫ ভাগ সাইবার ক্রাইম কমিয়ে আনা সম্ভব বলেও বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তারা মনে করেন সাইবার ক্রাইম থেকে নিজেকেই নিজে রক্ষা করতে পারে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ইলেক্ট্রনিক সার্টিফিকেট প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রক যুগ্ম সচিব আবুল মানসুর মোহাম্মদ র্সাফ উদ্দিন। আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা প্রযুক্তিবিদ একেএম নজরুল হায়দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক রাশেদা রওনক খান, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের যুগ্ম সম্পাদক মঈন উদ্দিন আহমেদ, সাইবার নিরাপত্তা প্রকৌশলী মো. মেহেদী হাসান প্রমুখ ।