সবুজের বুকে সংগীত সম্মাননা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’র দেশ বললেও সবাই সিলেটকে চিনে নিতে পারেন। পাহাড়, বন-জঙ্গলের ভেতর সুন্দর চা-বাগান এবং এর ভেতরে বাংলোগুলো আকর্ষণীয় ও প্রকৃতিবান্ধব। সুসজ্জিত চা-বাগান পেরিয়ে ২১ সেপ্টেম্বর দুপুরে পৌঁছে যাই হবিগঞ্জের দ্য প্যালেস লাক্সারি রিসোর্টের আঙিনায়। টিলার ভেতর এ যেন এক রাজপ্রাসাদ। এই রাজপ্রাসাদ বাংলাদেশি সংগীতের নানান বয়সী শিল্পীদের পদচারণে মুখর। ১৫০ একর জায়গার এই রিসোর্টে এবারই প্রথম একসঙ্গে বাংলাদেশি সংগীতের গুণী শিল্পী ও নতুন প্রজন্মের জনপ্রিয় তারকার সমাবেশ ঘটেছে। কারণ, চ্যানেল আই সংগীত পুরস্কারে এবারের আসর এখানেই আয়োজন করা হয়েছে। প্যালেসের টাওয়ার বিল্ডিংয়ে যখন ঢুকলাম, তখন দুপুরের খাবারে ব্যস্ত। শুধু গান নয়, এসেই দেখা অভিনয়জগতের গুণী মানুষ আফজাল হোসেনের সঙ্গে। একে একে দেখা মিলল আজাদ রহমান, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, লীনু বিল্লাহ, ফেরদৌস আরা, ফরিদা পারভীন, খুরশিদ আলম, কুমার বিশ্বজিৎ, মানাম আহমেদ, ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী, কনা, কোনাল, এলিটা, মেহরিন, ইমরান, আলিফ, রমাসহ আরও অনেকের সঙ্গে।

আধুনিক গানে যৌথভাবে পুরস্কার পেয়েছেন সিঁথি সাহা ও চন্দন সিন্‌হাআধুনিক গানে যৌথভাবে পুরস্কার পেয়েছেন সিঁথি সাহা ও চন্দন সিন্‌হা

টাওয়ার বিল্ডিংয়ের সামনে উন্মুক্ত মঞ্চের দিকে নজর চ্যানেল আই সংগীত পুরস্কারের এবারের আয়োজনের পরিকল্পক ইজাজ খান স্বপনের। ঢাকা থেকে সবাই ঠিকমতো এসেছেন কি না, তার খেয়ালও রাখতে হচ্ছে। এরই মধ্যে চারদিক অন্ধকার করে নামে ঝুম বৃষ্টি।

বৃষ্টি শেষে টাওয়ার বিল্ডিং থেকে ভিলার দিকে ঘুরতে বের হতে দেখলাম বিশেষ বাহনে চড়ে আসছেন চিরকুট সদস্যরা। সুইমিংপুলের বাইরে ছবি তোলায় ব্যস্ত দেখা গেছে আলোচিত চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে।

ফাহমিদা নবী প্যালেসের সেই বিশেষ গাড়ি নিজেই চালানো শুরু করলেন। বললেন, ‘আমিও পারি, হিহিহি।’ সেই গাড়িতে যাত্রী ছিলেন মিতালী মুখার্জি, সামিনা চৌধুরী। ফাহমিদা নবী তো বললেন, ‘ধন্যবাদ চ্যানেল আইকে অনুষ্ঠানটি ঢাকার বাইরে করবার জন্য। অলস বারান্দায় বসে পাখির কিচির মিচির, মেঘ দেখা, হঠাৎ বৃষ্টিতে বাংলোতে চায়ের আড্ডা…আহা!’

অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেছেন নুসরাত ফারিয়াঅনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেছেন নুসরাত ফারিয়া

অবশেষে চ্যানেল আই সংগীত পুরস্কারের সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পর অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমির সঞ্চালনায় শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল আজীবন সম্মাননা পর্ব। এটি তুলে দেওয়া হয় গুণী শিল্পী সুবীর নন্দীর হাতে। ‘আমার জন্মস্থান হবিগঞ্জ। এখানেই আমাকে সম্মানিত করা হলো। আমার জন্মভূমিতে চ্যানেল আই আমার প্রতি যে ভালোবাসা দেখিয়েছে, আমি খুব সম্মানিত বোধ করছি। এ সম্মাননা আমার একার নয়, পুরো হবিগঞ্জবাসীর।’ বলেন সুবীর নন্দী। এবার ‘চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস ২০১৮ পাওয়ার্ড বাই সেভেন আপ’ আয়োজনে আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করা হয় তাঁকে। সুবীর নন্দীর হাতে সম্মাননা স্মারক ও চেক তুলে দেন চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ; ট্রান্সকম বেভারেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুরশীদ ইরফান চৌধুরী, ইমপ্রেস গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুর রশীদ মজুমদার, সংগীতজ্ঞ আজাদ রহমান ও সংগীতশিল্পী মো. খুরশীদ আলম।

যাঁরা পুরস্কার পেলেন
বীথি পান্ডে (রবীন্দ্রসংগীত), ছন্দা চক্রবর্তী (নজরুলসংগীত), সাগর বাউল (লোকসংগীত), আসিফ ইকবাল (গীতিকার), অটামনাল মুন (সংগীত পরিচালক), চন্দন রায় চৌধুরী (মিউজিক ভিডিও), মাসুম বিল্লাহ (কাভার ডিজাইন), এস আই সুমন (সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার), সিঁথি সাহা ও চন্দন সিনহা (আধুনিক গান-২টি), অরণ্য (ব্যান্ড), রোমানা আক্তার ইতি (নবাগত সংগীতশিল্পী), চিরকুট (চলচ্চিত্রের গান) এবং গাজী আবদুল হাকিম (উচ্চাঙ্গসংগীত)।

গোল্ডেন ভয়েস অ্যাওয়ার্ডস
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা (রবীন্দ্রসংগীত), ফেরদৌস আরা (নজরুলসংগীত), মমতাজ (লোকসংগীত), সামিনা চৌধুরী (ছায়াছবির গান), কুমার বিশ্বজিৎ (আধুনিক গান) ও আফজাল হোসেন (গোল্ডেন মেকার)।