সবচেয়ে বাজে মুহূর্তের সামনে মোহামেডান

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

লিগে তৃতীয় কিংবা চতুর্থ স্থানে থাকাটাও মোহামেডানের জন্য যেখানে অবমাননার, সেখানে এবার অবনমন বা রেলিগেশনের লজ্জাজনক লড়াইয়ে নেমেছে মোহামেডান। ২০ খেলা শেষে তাদের পয়েন্ট ১৮।

লাখো মানুষের ভালোবাসার দল, দেশের ফুটবলের ঐতিহ্যের প্রতীক ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের করুণ দশা চলছে এবারও। দেশের শীর্ষ ফুটবল আসর-বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে অধ্যায় রচনা করার দ্বারে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী সাদা কালো শিবির।

স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালে প্রথম সিনিয়র ডিভিশন লিগের শিরোপা জেতার পর মোহামেডান ১২বার ঢাকা লিগ ফুটবলের চ্যাম্পিয়ন। তবে ২০০২ সালের পর আর কোনও লিগ শিরোপা জিততে পারেনি তারা। তবে ২০০৬-০৭ মৌসুমে পেশাদারি আদলে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ শুরু হওয়ার পর মোহামেডান প্রথম তিনবার শিরোপার কাছাকাছি গিয়ে হয়েছিল রানার্স-আপ। বিপিএলে এটিই তাদের শীর্ষ সাফল্য।

বিপিএলে এরপরের পাঁচটি আসরে মোহামেডান আর শিরোপা প্রত্যাশী দল হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারেনি। ২০১০-১১ এবং ২০১৪-১৫  মৌসুমে তৃতীয় হয়েছিল তারা, এটিও ছিল অনেকটাই অপ্রত্যাশিত।

ফেডারেশন কাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়ে মৌসুমে মোহামেডানের যাত্রা শুরু। লিগে তৃতীয় কিংবা চতুর্থ স্থানে থাকাটাও মোহামেডানের জন্য যেখানে অবমাননার, সেখানে এবার অবনমন বা রেলিগেশনের লজ্জাজনক লড়াইয়ে নেমেছে মোহামেডান। ২০ খেলা শেষে মোহামেডোনের পয়েন্ট ১৮। খেলা বাকি দুটি। একটি শেখ জামালের বিপক্ষে, অন্যটি আরেক রেলিগেশন এড়ানোর লড়াইয়ে থাকা দল উত্তর বারিধারার বিপক্ষে। উত্তর বারিধারার পরের খেলা ব্রাদার্স ইউনিয়নের  বিপক্ষে। বারিধারার পয়েন্ট ১৯ খেলায় ১৭। বর্তমানে পয়েন্ট তালিকার সবচেয়ে নিচের দল সকার ক্লাব ফেনীর সংগ্রহ ১৪। এ রাউন্ডে তারা খেলবে টিম বিজেএমসির বিপক্ষে। মূলত ২১তম রাউন্ডের শেষেই নির্ধারণ হয়ে যাবে কোন দলটি হবে অবনমিত। মোহামেডানকে এমন পারিপার্শ্বিকতায় এর আগে দেখা যায়নি।

মোহামেডানের এবারের দলটি কেমন, সেই প্রশ্ন আসাটা খুবই স্বাভাবিক। বলা যায় যে খেলোয়াড় দিয়ে মোহামেডান দল গড়েছে, তা শিরোপা জয়ের যোগ্য নয়। দলে জাতীয় দলের নিয়মিত খেলোয়াড় বলতে কেউ নেই। মিডফিল্ডার মাশুক মিয়া জনি ও ফরোয়ার্ড আামিনুর রহমান সজিব সাম্প্রতিক সময়ে খেলেছেন জাতীয় দলে। বিদেশি খেলোয়াড়দের মাঝে গিনিয়ান ইসমাইল বাঙ্গুরা ছাড়া উল্লেখযোগ্য কেউ নেই। সাবেক জাতীয় খেলোয়াড়দের মাঝে আছেন ডিফেন্ডার ইউসুফ আলি খান, মিডফিল্ডার ওমর ফারুক বাবু, ফরোয়ার্ড আবদুল মালেক ও গোলরক্ষক মোহাম্মদ নেহাল। পয়েন্ট তালিকার মাঝামাঝি থাকার দল এটি কিন্তু তাও পারেনি তারা।

সবচেয়ে বিস্ময়ের বিষয় হলো মোহামেডান লিগের দ্বিতীয় পর্ব খেলছে কোনও হেড কোচ ছাড়া। সহকারী কোচ মিজানুর রহমান ডন ও ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবু চালাচ্ছেন দলকে। মাঠে ম্যানেজার বাবুকেই দেখা যায় কোচের ভূমিকায়। পেশাদারী ফুটবলে হেড কোচবিহীন দল, তাও আবার মোহামেডান, এমন দৃশ্য এর আগে দেখা যায়নি।

বর্তমানে ১২ দলের মাঝে দশ নম্বরে আছে মোহামেডান। শেখ জামালের কাছে মোহামেডান যদি হেরে যায় তবে উত্তর বারিধারার বিপক্ষেই তাদের লড়াই হবে দশম স্থানের জন্য। আর দুটি খেলা জিতলেও সর্বোচ্চ অষ্টম স্থানের উপরে যাওয়া মোহামেডানের পক্ষে সম্ভব নয়। আর যদি তাই হয়, তাহলে এটিও বলা যায় স্মরণকালের সবচেয়ে ব্যর্থ ফুটবল মৌসুম কাটানোর পথেই রয়েছে ঐতিহ্যবাহী দলটি।

বিপিএলে মোহামেডান : 

মৌসুমপয়েন্টঅবস্থান
২০০৭-০৮৪০রানার্স-আপ
২০০৮-০৯৪৪রানার্স-আপ
২০০৯-১০৬২রানার্স-আপ
২০১০-১১৩০ষষ্ঠ
২০১১-১২৩৪তৃতীয়
২০১২-১৩২৫পঞ্চম (৯ দল)
২০১৩-১৪৪৫চতুর্থ (১০ দল)
২০১৪-১৫৩৮তৃতীয়

/কেআর/

সূত্র : বাংলাট্রিবিউন