সন্তানের স্বেচ্ছা মৃত্যুর আবেদন জানিয়ে মোদী-মমতাকে চিঠি সর্বস্বান্ত পরিবারের

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

অসুস্থ শিশুর চিকিৎসা করাতে শুধুমাত্র ভিটে টুকু বাদে সংসারের সমস্ত কিছুই বিক্রি করে দিতে হয়েছে৷ রোজগার বলতে প্রশাসনিক চত্বরে বসে দলিল লেখকের কাজ করে যা কিছু জুটতো৷ কিন্তু বছর দু’য়েক আগে উচ্ছেদের নোটিশ দিয়ে প্রশাসন রোজগারের সেই পথও কেড়ে নিয়েছে৷ কর্মহীন অবস্থায় দীর্ঘ আট বছর ধরে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসা করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত কর্মহীন পার্থ রায়৷ বাধ্য হয়েই মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্বেচ্ছা মৃত্যুর আবেদন জানালেন অসুস্থ শিশু প্রিয়াংশুর পিতা৷

ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর নিকট কর্মসংস্থানের আবেদন জানিয়ে পত্র লিখেছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ব্লকের কাঞ্জিয়ালসি গ্রামের বাসিন্দা পার্থ রায় ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা৷ বালুরঘাট অভিযাত্রী স্কুলের ক্লাস থ্রির ছাত্র প্রিয়াংশু রায় চার মাস বয়স থেকেই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত৷ দীর্ঘ আট বছর ধরে শিশুটির চিকিৎসা করাতে গিয়ে সংসারের সমস্ত কিছুই বিক্রি করে দিতে হয়েছে বাবা পার্থ রায়কে৷ বর্তমানে শিশুর চিকিৎসার আর কোনও উপায় না দেখে স্বেচ্ছা মৃত্যুর পথই বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ স্ত্রী বেবি রায় দুই সন্তান আর বৃদ্ধ বাবা মা নিয়েই পার্থ বাবুর পরিবার৷ দুই বছর আগেও তিনি বালুরঘাটে জেলা প্রশাসনিক চত্বরের ভেতর দলিল লেখকের কাজ করতেন৷ ২০১৫ সালে প্রশাসন চত্বরের ভেতরের সকলকে উচ্ছেদ করায় কয়েকজনের পাশাপাশি তিনিও কর্মহীন হয়ে পড়েন৷

এই অবস্থায় বাড়ির জমি ও অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি করে এতদিন বড়ছেলে প্রিয়াংশুর চিকিৎসা করালেও এখন তিনি নিঃস্ব৷ বাধ্য হয়েই কিছুদিন আগে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে স্ত্রী অথবা নিজের একটি কাজের সংস্থান চেয়ে আবেদন করেছেন তিনি৷ সেই সেই আবেদনপত্রে কাজ না পেলে স্বেচ্ছামৃত্যু ছাড়া অন্য উপায় না থাকারও কথা জানিয়েছেন অসহায় এই পিতা৷ ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী দুই অফিস থেকেই আবেদনপত্রের প্রাপ্তি স্বীকারও এসে পৌঁছেছে পার্থ রায়ের হাতে৷

কাঞ্জিয়ালসি গ্রামে বাড়ি পার্থ রায় জানিয়েছেন যে চারমাস বয়স থেকেই বড় ছেলে প্রিয়াংশুর থ্যালাসেমিয়া ধরা পড়েছিল৷ তখন থেকেই চিকিৎসা শুরু৷ সব কিছুই ঠিকঠাক ছিল৷ কিন্তু ২০১৫ সালে প্রশাসনিক ভবন চত্বর থেকে উচ্ছেদে কর্মহীন হয়ে পড়তে হয়েছে তাঁকে৷ এই পরিস্থিতিতে প্রথমাবস্থায় জমি ও অন্যান্য জিনিসপত্র বিক্রি করে ছেলের চিকিৎসা চালিয়ে গেলেও এখন আর তা সম্ভব হচ্ছে না৷ সরকারি হাসপাতালে থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসার ওষুধ সাপ্লাই না থাকায় খুবই অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে৷ বাড়িতে বাড়ি বৃদ্ধ ও অসুস্থ পিতামাতার চিকিৎসা সেই সঙ্গে বড় ছেলের চিকিৎসা চালাতে গিয়ে ছোট ছেলেকে এখনও ভাল কোনো স্কুলে ভর্তি করাতে পারেননি৷ এই পরিস্থিতিতে আত্মহত্যার পথ ছাড়া তাদের সামনে আর কোনও উপায় নেই বলেও তিনি জানিয়েছেন৷ কলকাতা 24