সন্তানদের দেখতে ঢাকায় এসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার নারী

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

সন্তান-স্বামীর সাক্ষাৎ পেতে যশোরের গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় এসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী (২৯)। গত মাসে শেষের দিকে মোহাম্মদপুর থানার বসিলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় শনিবার রাজধানীর বছিলা, গাবতলী, ডেমরা ও ভোলার তজুমুদ্দিন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- বিল্লাল হোসেন (২৫), আল-আমিন হোসেন (২৬), সবুজ (২৬), রাসেল ওরফে মোল্লা রাসেল (২৪) ও শফিকুল ইসলাম (২৬)।

রোববার সকালে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) এইচএম আজিমুল হক।

তিনি বলেন, ভুক্তভোগী নারী একসময় স্বামী-সন্তানসহ মোহাম্মদপুরের বছিলায় থাকতেন। মাস কয়েক আগে অসুস্থতার কারণে তিনি সন্তানদের স্বামীর কাছে রেখে গ্রামের বাড়িতে যান। এর মধ্যে কিছু না জানিয়েই স্বামী তাকে তালাক দেন। গত ২৫ জানুয়ারি তিনি গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় আসেন। এ দিনই তিনি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। ধর্ষণের ঘটনায় ২৭ জানুয়ারি মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। মামলায় অজ্ঞাত পাঁচ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।

ডিসি বলেন, ঘটনার দিন বেলা সাড়ে ৩টার দিকে ভুক্তভোগী নারী তার সাবেক স্বামীর বাসায় যান। গিয়ে তাদের কাউকে বাসায় খুঁজে পাননি। রাত প্রায় ৯টা পর্যন্ত তিনি আশপাশের এলাকায় খোঁজাখুঁজি করেন। না পেয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি বছিলা ৪০ ফিট তিন রাস্তার মোড় থেকে গাবতলী যাওয়ার জন্য একটি রিকশা ভাড়া নেন। কিন্তু গাবতলী না নিয়ে বিভিন্ন রাস্তায় ঘোরাতে থাকেন রিকশাচালক। ভুক্তভোগীকে তার সাবেক স্বামীর বাসা খুঁজে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এ সময় চালক বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। এরপর প্রায় তিন ঘণ্টা ঘুরিয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বছিলা ফিউচার টাউনের একটি স্থানে যান। সেখানে রিকশাচালকসহ পাঁচজন মিলে তাকে ধর্ষণ করেন।

পুলিশ জানায়, একপর্যায়ে নারীর চিৎকারে নিরাপত্তাকর্মীসহ আশপাশে লোকজন ছুটে আসেন। তখন চালকসহ পাঁচজন পালিয়ে যান। পরে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ ওই নারীকে উদ্ধার করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠায়।

ডিসি বলেন, মামলার পর পুলিশ ঘটনাস্থলসহ আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে। সেগুলো বিশ্লেষণ করে প্রযুক্তির সহায়তায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হয়। গ্রেফতার ব্যক্তিদের থেকে ভুক্তভোগী নারীর মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সময় দুজন আশপাশে অবস্থান করে সহযোগিতা করে। আশা করছি দ্রুততম সময়ে এই দুজনও গ্রেফতার হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রেফতার তিনজনই শ্রমিক শ্রেণির মানুষ। এর আগে তারা ছোটখাটো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। আমরা তাদের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছি। আরেক প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, ওই নারীর স্বামীর সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। আশা করছি তাড়াতাড়ি তার সন্ধান পাওয়া যাবে।

সূত্র: যুগান্তর