শিবগঞ্জে ৫ ইউনিয়ন প্লাবিত: ত্রাণ ও বিশুদ্ধ পানির সংকট

কামাল হোসেন:
ভারত ফারাক্কার গেট খুলে দেয়ায় পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। শুরু হয়েছে ভাঙন ভারত সরকার বিহার রাজ্যের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সামলাতে ফারাক্কার ১১৭টি গেটের মধ্যে ৯৯টি গেট খুলে দিয়েছে।

এতে উজান থেকে নেমে আসা পানি পদ্মা ও পাগলা নদীতে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজান থেকে নেমে আসা পানিতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রামাঞ্চল। শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে ৭০ ভাগ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব ইউনিয়নের অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু রাস্তায় কিংবা শহরে কোনো স্বজনের বাড়িতে।

আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত পদ্মা নদীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ সেন্টিমিটার বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসডি আবদুস সাত্তার জানান। গত কয়েক দিন থেকে পদ্মা ও পাগলা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে পাঁকা, দুর্লভপুর, উজিরপুর, ছত্রাজিতপুর, ঘোড়াপাখিয়া ও মনাকষা ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

পাঁকা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, গত কয়েক দিনের বন্যায় ও ফারাক্কার গেট খুলে দেয়ায় এ ইউনিয়নের ৩, ৭, ৮ ও ৯ নম্বরের ওয়ার্ডের ৭০ ভাগ বাড়িঘরে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়া প্রায় দুই হাজার বিঘা জমির ধান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ইউনিয়নের হলদিপাড়া, কটাপাড়া, পোঁড়াপাড়া, দক্ষিণপাঁকা, কদমতলা, চরলক্ষীপুর ও জামাইপাড়া গ্রামের নদী ভাঙনের ফলে প্রায় একহাজার বাড়িঘর সরিয়ে নিয়েছে লোকজন। অনেক পরিবারই খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে।

অপরদিকে উজিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিন জানান, গত কয়েক দিনের বন্যার পানি বাড়তে থাকায় এ ইউনিয়নের পাঁচশ বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। অনেক পরিবার ঘরের মধ্যে খাট-চৌকি উঁচু করে বসবাস করছে। অন্যদিকে দুর্লভপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রাজিব রাজু বন্যা কবলিত এলাকা থেকে জানান, দুর্লভপুর ইউনিয়নে ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের আটশ বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়েছে এবং প্রায় সাতশ বিঘা জমির ধান বন্যা পানিতে তলিয়ে গেছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী আরিফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বন্যার পানি বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে জানান, হঠাৎ করে ফারাক্কার গেট খুলে দেয়ায় শিবগঞ্জের পাঁচটি ইউনিয়নের বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে পাঁকা ইউনিয়নে বন্যায় বেশিরভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে এসে তিনি জানান।

বন্যার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চরলক্ষ্মীপুরসহ অন্যান্য এলাকায় পদ্মার ভাঙন এবং বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বিশুদ্ধ পানির সংকট মোকাবেলায় মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে বলে প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন। এদিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করা হলে ধানসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করেন।

স/আ