‘শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরাতে না পারলে জবাব দিতে হবে প্রতিষ্ঠান প্রধানের’

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

শিক্ষার্থীকে রাজপথ থেকে ক্লাসে ফেরাতে না পারলে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে জবাব দিতে হবে। রবিবার ঢাকা মহানগরীর সকল কলেজের (সরকারি-বেসরকারি) অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এমন বার্তাই পৌঁছে দেয়া হয়।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে চলমান আন্দোলন থেকে ফিরিয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করতেই এ সভা করে শিক্ষামন্ত্রণালয়। রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন- শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। বক্তব্য রাখেন সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর মো. মাহাবুবুর রহমান।
সভায় শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরাতে অভিভাবকদের সম্পৃক্ত করতে হবে। শিক্ষক ও অভিভাবকদের যৌথভাবে শিক্ষার্থীদের বোঝাতে হবে। কোন প্রকার অজুহাত দেখানোর সুযোগ নেই। আপনারা শিক্ষার্থীদের বোঝান যে, তারা আমাদেরকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। এইবার ক্লাসে ফিরতে হবে। শিক্ষার্থীকে রাজপথ ছেড়ে ক্লাসে ফেরাতে না পারলে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে জবাব দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা খবর নেবো, তথ্য রাখবো, কে করছেন, কে করছেন না। অনেকেই এবার পেরেছেন। এবার আপনাদের পরীক্ষার সময়, কে পারবেন আর কে পারবেন না।
সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সোহরাব হোসেন বলেন, ছাত্ররা যেন কোন অবস্থাতেই রাস্তায় নামতে না পারে সে জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ভূমিকা রাখতে হবে। আগামীকাল থেকে নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই কোন শিক্ষার্থী যেন রাজপথে না নামে।
সভায় রাজউক উত্তর মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার মো. শওকত আলম বলেন, যেসব এলাকায় শিক্ষার্থীদের অবস্থান বেশি হয়েছে তা চিহ্নিত করে সেখানে কোন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে তা দেখতে হবে। প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র প্রতিনিধিদের বোঝাতে হবে। সড়ক, নৌ, স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে মতবিনময় করতে হবে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের সর্বোচ্চ সর্তক থাকার পরামর্শ দেন কবি নজরুল কলেজের অধ্যক্ষ আই কে সেলিম উল্লা খোন্দকার।
ধানমন্ডি আইডিয়ার স্কুলের অধ্যক্ষ বলেন, প্রথম দিকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর ছিল। এখন তারা নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে। স্কুলে ইউনিফর্ম, আইডি কার্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। সিটি কলেজের অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান খান বলেন, দূর দূরান্ত থেকে কলেজে আসা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে হবে। যেসব শিক্ষার্থী আন্দোলনে অংশ নিচ্ছে তাদের ডেকে সমন্বয় সভার মাধ্যমে কাউন্সিলিং করতে হবে।
ঢাকা কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সভা করে এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে। যারা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদের পৃথক ভাবে কাউন্সিলিং করাতে হবে।
সভায় গভর্নিং বডিকে সক্রিয় করা, অভিভাবকের সঙ্গে একাধিক মাধ্যমে যোগাযোগ রাখা, ফেসবুক বন্ধ করা, শিক্ষার্থীদের হাতে স্মার্ট ফোন না দেওয়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগ করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন স্থানে স্পিড ব্রেকার, আন্ডার পাস, ফুটভার ব্রিজ নির্মাণ, স্কুল বাসের আলাদা ব্যবস্থা করা, প্রতিটি স্কুলে স্কুল ড্রেস বাধ্যতামূলক করা এবং শিক্ষার্থীদের শিক্ষক ও অভিভাবকদের মাধ্যমে কাউন্সেলিং করার প্রস্তাব দেন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা।
মতবিনিময় সভাটি দু’টি শিফটে হয়। প্রথম শিফটে ঢাকা মহানগরীর ২৪২টি সরকারি-বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ এবং দ্বিতীয় শিফটে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করেন।