শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর রাজশাহীতে বেড়েছে হেলমেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
নিরাপদ সড়কের দাবিতে সারা দেশে কয়েকদিন থেকেই আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। সড়কে চলাচলকারী সকল যানবাহনের বৈধ লাইসেন্স, ফিটনেস ও বিভিন্ন কাগজপত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তারা।এতে করে দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থা নড়ে চড়ে বসে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর সচেতনতা বেড়েছে জনমনে। বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে যানবাহনের কাগজপত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। আন্দোলনের পর রাজশাহীতে বেড়েছে মোটরসাইকেলে হেলমেট ব্যবহারকারীদের সংখ্যা। বৃদ্ধি পেয়েছে হেলমেট বিক্রিও।

সোমবার নগরীর বিভিন্ন প্রধান সড়কে ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ চালক মাথায় হেলমেট পড়ে রাস্তায় নেমেছেন। প্রতি ৫০ টি মোটর সাইকেলের ৩৫ টি চালকই মাথায় হেলমেট পরিহিত অবস্থায় রয়েছে। কেউ নিরাপদভাবে মোটর সাইকেল চালাতে আবার কেউ ট্রাফিক আইনের মামলার ভয়ে হেলমেট পড়েছেন।

যেভাবেই হোক না কেন রাস্তায় মোটর সাইকেল চালাতে আগের তুলনায় অধিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে হেলমেট ব্যবহারকারী। তবে থেমে নেই ক্ষমতার অপব্যহার। প্রশাসনিক অথবা রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাটিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন অনেকেই।

যানবাহনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে রাখতে রাজশাহী মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে নানা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নগরীর জিরোপয়েন্ট এলাকাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থানে বসানো হয়েছে ট্রাফিক চেক পোষ্ট। বিভিন্ন স্থানে টানানো হয়েছে সচেতনতামূলক বানী। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ে নিষেধাজ্ঞা ও ফুটপাতের উপর দোকান বা পন্য সামগ্রী না বসানোর নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। এছাড়াও রাস্তায় মোটর সাইকেল চালকদের বাহনে হেলমেট না রেখে মাথায় পরে চলাচল করতে মৌখিকভাবে সচেতন করা হচ্ছে।

কয়েকদিনের আন্দোলনের পর নগরীর মোটরবাইক সরঞ্জাম বিক্রির দোকানগুলোতে হেলমেট বিক্রির পরিমান বেড়েছে। যাদের হেলমেট নাই অথবা হেলমেট নস্ট হয়ে গেছে নতুন হেলমেট সংগ্রহ করতে দোকানগুলোতে ভীড় জমাচ্ছে মানুষ। নগরীর রানীবাজার এলাকার মোটরবাইক পার্টস এর দোকানী ইমন হোসেন সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, হেলমেচ বিক্রির সিজন চলে মূলত শীতে। কিন্তু গত কয়েক দিনে নতুন হেলমেট বেশি বিক্রি হচ্ছে। যাদের হেলমেট পুরোনো হয়ে গেছে অথবা যাদের নাই তারা এসে হেলমেট কিনে নিয়ে যাচ্ছে।


হেলমেট কিনতে আসা ক্রেতা শফিকুর রহমান বলেন, নিজেদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের অবশ্যই হেলমেট পড়েই গাড়ি চালাতে হবে। এতে কড়ে বড় ধরনের ঝুকি থেকে আমরা বাঁচতে পারি। আমার হেলমেট অনেক পুরোনো হয়ে গেছে তাই নতুন আরেকটা নিতে এসেছি।

আবু রায়হান নামক এক চালক বলেন, সচারচর হেলমেট পড়ি না। কিন্তু এখন অনেকটা বাধ্য হয়েই হেলমেট পড়তে হচ্ছে। যদিও নিজের জন্যই সেটা ভাল তবে গরমের কারণে সব সময় হেলমেট পড়া হয়না।

জানতে চাইলে নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আমান উল্লাহ আমান সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, নিরাপদ সড়ক এবং জনগনের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা কাজ করে চলেছি। আমাদের সর্বাত্তক চেষ্টা থাকছে রাজশাহীকে সুন্দর করে তোলার জন্য। ট্রাফিক জ্যাম নিরসনসহ জনগনের বাড়তি কোন দূর্ভোগ যাতে না হয় সে লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোকে এক লেনে ছোট বাহন চালানোর নির্দেশনা দিয়েছি। সেই সাথে রাস্তার মাঝখানে কোন যানবাহন থেমে যেন যাত্রী উঠা নামা না করে সেদিকে লক্ষ্য রেখে মাইকিং করে তাদের সচেতন করছি।


তিনি আরও বলেন, মোটর সাইকেল ব্যবহারকারীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যেন তারা রাস্তায় হেলমেট ছাড়া চলাচল না করে। হেলমেট পড়ে চলাচল না করলে ছোট একটি দুর্ঘটনাও বড় হয়ে যাবে। তাই আমরা সকল চালককে সচেতন করছি সেই সাথে আইন প্রয়োগ করছি। যাতে করে সকলের মধ্যে আত্মসচেতনাবোধ তৈরী হয়।
স/শ