শখ থেকে সফল উদ্যোক্তা কেয়া

 

জেসমিন আরা ফেরদৌস

বাবার ইচ্ছা মেয়েকে বিসিএস ক্যাডার বা সরকারি চকুরজীবী রুপে দেখার থাকলেও মেয়ে তার শখকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। ছোট বেলা থেকেই রান্নার প্রতি ঝোঁক ছিলো তার। পরবর্তীতে রান্নাকে কেন্দ্র করেই হয়ে উঠেছেন একজন সফল উদ্যোক্তা।

তিনি আর কেউ নন,তিনি ‘কেয়া’স কিচেন’র স্বত্বাধিকারী কানিজ ফাতেমা কেয়া। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে তিনি এখন একজন সফল উদ্যোক্তা। তিন ভাই বোনের মধ্যে তিনি সকলের বড়।

উদ্যোক্তা হয়ে উঠার ইতিকথা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমার রান্নার প্রতি বেশ ঝোঁক ছিলো। তার পাশাপাশি আমার বাবা একজন ব্যবসায়ী। তাই ছোট থেকেই বাবাকে দেখতাম আর ভাবতাম বড় হয়ে তার মতো একজন ব্যবসায়ী হবো। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ণরত অবস্থায় ই টিউশনের টাকা জমিয়ে বাবার সাথে আলুর ব্যবসা শুরু করি। কিন্তু রান্নার প্রতি বিশেষ একটা ঝোঁক থাকার পরবর্তীতে এটাকেই আঁকড়ে ধরেই আমি আমার পথচলা শুরু করি।

২০২০ সালের করোনা মহামারীর শুরুতে লকডাউনে বাসায় যখন বসে ছিলাম তখন থেকেই আমি আমার আমার ব্যবসা শুরু করি। বাসায় আমি যেসব রান্না করতাম তারই ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড দিতাম এবং সেখানে বেশ সাড়া পেতাম। একদিন হঠাৎ করেই আমার বোন ‘Keya’s Kitchen’ নামে একটি ফেসবুক পেজ খুলে দেয় এবং আমার রান্না করা খাবারের ছবি আপলোড করি এবং সেটা আপলোড করার সাথে সাথেই পরেরদিনই আমার কাছে অর্ডার আসে।’

কতটাকা পুঁজি নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন-এ প্রসঙ্গে কেয়া বলেন, ‘আমি একদমই কোন পুঁজি ছাড়াই আমার ব্যবসা শুরু করি। প্রথম যখন অর্ডার আসে তার কাঁচামাল বাজার করে নিয়ে আসি এবং তা দিয়েই রান্না করে ডেলিভারি দিই। আর এভবেই আগের অর্ডার থেকে যা লাভ হয় সে জমানো টাকা দিয়েই আমি পরের অর্ডারের খাবারের জন্য বাজার করি। আর এভাবেই কোন রকম পুঁজি ছাড়াই আমি আমার ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন,‘বর্তমানে আমি ক্রেতাদের চাহিদা মাফিক বিভিন্ন ধরনের খাবার ডেলিভারি দিয়ে থাকি। তার মধ্যে আছে বিভিন্ন ধরনের কেক,বাংলা ও চাইনিজ খবার,বিরিয়ানি,নানা ধরনের পিঠা।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এখন প্রায় প্রতিদিনই অর্ডার পেয়ে থাকি। এছাড়াও আমার এখন রিপিট কাস্টমার সবচেয়প বেশি। তবে অর্ডার নেবার ক্ষেত্রে আমি কাস্টমারদের একদিন আগে অর্ডার করতে বলি। কারণ আমি সব সময়ই কাস্টমারদের ফ্রেশ খাবার দিয়ে থাকি। তারা অর্ডার করার পর বাজার করে রান্না করে তারপর ডেলিভারি দেই।’

প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের উত্তরে নগরীর ভেড়ি পাড়া এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘মাস শেষে আমার আয় হয় ১৫-২০ হাজার টাকা। এছাড়াও আমার খাবার বাড়ি বাড়ি পৌছে দেবার জন্যও এখানে আরও তিন জন কাজ করে। তাদেরকেও আমি তাদের নির্ধারিত পারিশ্রমিক দেয়।’

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে কেয়া জানান,আমার কিচনটাকে ভবিষ্যতে আরও বড় করার চিন্তা ভাবনা আছে। এবং সেখানে প্রতিনিয়ত আরও বেশি অর্ডার আসবে। এবং সেখানে আমি আরো অনেককে কাজ দিতে চাই। আমি চাই যারা বেকার আছে তারাও আমার এখমে কাজ করে আমার মতো স্বাবলম্বী হয়ে উঠুক।

স/জে