লেবাননের নতুন সরকার নিয়ে হিজবুল্লাহর রূপরেখা

গত সপ্তাহে বৈরুতের ভয়াবহ বিস্ফোরণ লেবাননকে এক নতুন সংকট ও রাজনৈতিক বাস্তবতার সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। বিস্ফোরণের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াবের সরকার।

নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত এই সরকারই কাজ চালিয়ে যাবে। ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাপন্থী আরব দেশগুলোর পরামর্শে একটি জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনের আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে লেবাননের সংবাদমাধ্যমগুলো।

এএফপি জানায়, লেবাননে একটি জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছে দেশটির অন্যতম প্রভাবশালী ইসলামী দল হিজবুল্লাহ। নতুন সরকার গঠন নিয়ে জোর আলোচনার মধ্যে শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান দলটির প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ।

তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের আইডিয়া শুধু সময় ক্ষেপণ করবে। আমরা মনে করি না লেবাননে নিরপেক্ষ কোনো সরকার গঠন করা যাবে। আমরা মনে করি এখন আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়। ঐক্যমতের ভিত্তিতে আমাদের সরকার গঠিত হওয়া অসম্ভব নয়। তবে ওই সরকারে রাজনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা থাকতে পারেন।

চলতি মাসের শুরুর দিকে (৪ আগস্ট) লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ রাসায়নিক বিস্ফোরণে বৈরুত বন্দরনগরী ও এর আশপাশের পুরো এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এতে ঘরবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়েছেন অন্তত ৩ লাখ অধিবাসী। ফলে আগে থেকে নানা সংকটে ধুঁকতে থাকা লেবানন অর্থনৈতিকভাবে এখন কার্যত পঙ্গু।

ফ্রান্স চায় টেকনোক্র্যাট সরকার

লেবাননকে উদ্ধারে একটি টেকনোক্র্যাট সরকার চান ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। নতুন ধরনের সরকার গঠনে দেশটির রাজনৈতিক নেতাদের বারবার তাগিদ দিচ্ছেন তিনি।

শাসন ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সংস্কার করা, সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং দেশের পুনর্গঠনে বিদেশি দাতাগোষ্ঠীগুলোর দেয়া সহায়তার অর্থের সুষ্ঠু ও যথার্থ ব্যবহারের লক্ষ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সরকার গঠন চাচ্ছেন ম্যাক্রো।

নতুন এ সরকারের প্রধান হিসেবে সাবেক দু’বারের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরিকে ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। তবে তার এ প্রস্তাব মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন ও খ্রিস্টান দলগুলো। ফরাসি কূটনৈতিক সূত্র ও লেবাননের সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স।

ওই বিস্ফোরণের দু’দিন পরই প্রথম কোনো রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে বৈরুত সফর করেন ম্যাক্রো।

ফ্রান্সের কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স বলেছে, ওই সফরেই লেবাননে পুনর্গঠনে দেশটির নেতাদের নতুন ধরনের সরকার গঠনের ব্যাপারে বার্তা দেন তিনি।

বিস্ফোরণের পেছনে সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি ও অদক্ষতাকে দায়ী করে নতুন করে বিক্ষোভ ও জনরোষের মধ্যে চলতি সপ্তাহে পদত্যাগ করে লেবানিজ সরকার। তবে নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত ওই সরকারই দায়িত্ব পালন করবে। ইতিমধ্যে নতুন সরকার গঠনে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে।

 

সূত্রঃ যুগান্তর