লিবিয়ায় ড্রোন হামলায় নিহত তাহেরপুরের বাবুলালের দাফন সম্পন্ন

বাগমারা প্রতিনিধি:

জীবিকার তাগিদে লিবিয়ায় গমন করে ড্রোন হামলার শিকার হয়ে অবশেষে লাশ হয়ে ফিরলেন তাহেরপুরের বাবুলাল। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটায় জানাজা শেষে বিষুপাড়া মহল্লায় তাকে দাফন করা হয়।

তার জানাযায় এলাকার জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী সহ শতশত লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ নভেম্বর লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির উপকণ্ঠ ওয়াদি রাবিয়ায় একটি বিস্কুট কারখানায় ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন বাবুলাল হোসেন (৪৫)। তাঁর বাড়ি রাজশাহীর বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভার বিশুপাড়া মহল্লায়।

বাবুলাল হোসেন ছেলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র নাজিম উদ্দিন জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ৯.৪০ মিনিটে একটি বিমানে লিবিয়া থেকে তাঁর বাবার লাশ ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছে। সেখানে আনুষ্ঠানিকতা সেরে তাঁর মা নাজমা বেগম স্বামীর লাশের কফিন গ্রহণ করে। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে রাত সাড়ে নয়টায় লাশ বিশুপাড়া গ্রামে পৌঁছায়।

এসময় সেখানে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণ হয়। কফিন ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজন ও এলাকার লোকজন। লাশ আসবে এমন খবরে আগ থেকে বাড়িতে তাঁরা অবস্থান করছিলেন। তবে কফিন থেকে লাশ বের করা হয়নি। সেখানেই রয়েছে লাশ। খুললে দুর্গন্ধ বের হতে পারে এমন আশংকায় খোলা হয়নি। তবে দাফনের আগে খুলে স্বজনদের দেখানো হবে বলে পরিবারের পক্ষে জানানো হয়েছে।

বাবুলালের স্ত্রী নাজমা বেগম বলেন, তাঁদের নিজস্ব কোনো জমি না থাকায় পাশের জামগ্রাম নামক স্থানে বাড়ি করার জন্য পাঁচ শতক জমি কিনেছেন। সেখানে বাড়ি করার পর তিনি দেশে ফিরে নতুন ঘরে ঘুমাবেন বলে জানিয়েছিলেন। গত ১৮ নভেম্বর সকালে ওই জমি রেজিস্ট্রি হয়। ওইদিনই তিনি (বাবুলাল হোসেন) ড্রোন হামলায় নিহত হন।

স্ত্রী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, স্বামীই ছিল সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। অনেক ঋণ রয়েছে, কীভাবে সেগুলো পরিশোধ করবেন এবং চলবেন তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। এজন্য তিনি সরকারের পক্ষে সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

এ বিষয়ে বাগমারা উপজেলা চেয়ারম্যান অনীল কুমার সরকার বলেন, আমরা বাবুলালের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আমরা তার বিধবা স্ত্রী ও সন্তারের প্রতি উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফ আহম্মেদ বলেন, আমরা নিহত বাবুলালের পারিবারকে ১০ হাজার টাকা ,শুকনো খাবার, কম্বল সহ কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ব্যবস্থা করেছি। অচিরেই তার বিধবা স্ত্রীর নামে একটি বিধবা ভাতার কার্ড করে দেওয়া হবে। এছাড়া ডিসি স্যার বলেছেন বাবুলালের স্ত্রীকে একটি লিখিত আবেদন দিলে তার নামে এককালীন কিছু টাকা ও একটি ঘর নির্মাণের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

স/অ