লিটন-ইমরুলের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে কুমিল্লার বিশাল জয়

টানা জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল এবারের বিপিএলের সবচেয়ে গোছানো দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে মিনিস্টার ঢাকার কাছে সেই জয়রথ থামে। পরের ম্যাচেই আজ চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ফের ঘুরে দাঁড়াল কুমিল্লা। অধিনায়ক ইমরুল কায়েস এবং লিটন দাসের ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ে কুমিল্লা জিতেছে ৯ উইকেটে।

জয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে লিটন দাস আউট না হলে জয়টা ১০ উইকেটেই আসতে পারত। এই জয়ে নেট রানরেটে ফরচুন বরিশালকে পেছনে ফেলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠল কুমিল্লা।

মিরপুর শেরে বাংলায় রান তাড়ায় নেমে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের শুরুটা হয় ধীর। শরীফুলের করা দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে ইমরুলের সৌজন্যে আসে প্রথম বাউন্ডারি। ক্রমেই দুজনের জুটি জমে ওঠে। দারুণ ব্যাটিংয়ে ৩৭ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ১৩ নম্বর ফিফটি পূরণ করেন অধিনায়ক ইমরুল। লিটনও ছিলেন দারুণ ছন্দে। ১২ ওভারেই একশ ছাড়ায় কুমিল্লার স্কোর। নাসুম আহমেদের করা ১৫তম ওভারের শেষ বলটি ডিপ মিড উইকেটের ওপর দিয়ে সীমানাছাড়া করে ক্যারিয়ারের ১৫তম ফিফটি পূরণ করেন লিটন। যদিও সেটি হতে পারত সহজ ক্যাচ। সীমানার উপর দাঁড়ানো উইল জ্যাকের হাত ছুঁয়ে বলটি দড়ি পার হয়। জয় থেকে ৬ রান দূরে থাকতে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর বলে আউট হয়ে যান ৩৭ বলে ৪ চার এবং ৩ ছক্কায় ৫৩ রান করা লিটন। মৃত্যুঞ্জয়কে ছক্কা হাঁকিয়ে বাকি কাজটা সারেন ৬২ বলে ৬ চার ৫ ছক্কায় ৮১* রানে অপরাজিত থাকা ইমরুল। ৯ বল এবং ৯ উইকেট হাতে রেখেই জিতে যায় কুমিল্লা।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচের কর্তিত ১৮ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৮ রান তোলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। প্রথম ওভারেই নাহিদুলের বলে চ্যাডউইকট ওয়ালটনকে (০) হারিয়ে তারা বিপদে পড়েছিল। এরপর হাত খুলে খেলতে থাকেন অপর ওপেনার উইল জ্যাকস আর তিন নম্বরে নামা আফিফ হোসেন ধ্রুব। দুজনের ৬২ রানের জুটি ভাঙে আফিফের বিদায়ে। তানভীর ইসলামের বলে বোল্ড হয়ে আফিফের ২১ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২৭ রানের সম্ভাবনাময় ইনিংসটির পরিসমাপ্তি ঘটে। তবে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৩১ বলে ৪ চার ৩ ছক্কায় ফিফটি তুলে নেন উইল জ্যাকস। তার সঙ্গী শামীম হোসেনও আজ ব্যর্থতা কাটিয়ে ভালোই খেলছিলেন। ১২.৫ ওভারে চট্গ্রামের সংগ্রহ যখন ২ উইকেটে ১০৭ রান, তখন হুট করে নেমে আসে বৃষ্টি। বন্ধ হয়ে যায় খেলা। ৬৪ মিনিট বন্ধ থাকার পর সাড়ে ৭টায় খেলা ফের শুরু হয়। তবে খেলা নেমে আসে ১৮ ওভারে। নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে ২২ বলে ২৬ করা শামীমকে ফেরান মুস্তাফিজ।

একই ওভারের শেষ বলে দ্য ফিজের ঝুলিতে আসে আরও একটি উইকেট। ৩৬ বলে ৫ চার ৩ ছক্কায় ৫৭ রান করা ওপেনার উইল জ্যাকস ছক্কা মারতে গিয়ে লং অফের সীমানা দড়ির ওপর ডুপ্লেসিসের হাতে ধরা পড়েন। উইকেটে আসেন চট্টগ্রাম অধিনায়ক নাঈম ইসলাম। কিন্তু মুস্তাফিজের দ্বারা কট অ্যান্ড বোল্ড হওয়ার আগে তার সংগ্রহ ৫ বলে ৩! একই ওভারের চতুর্থ বলে কুমিল্লার বড় ভরসার নাম বেনি হাওয়েলকে (৩) ফেরান দ্য ফিজ। নিজের এবং ইনিংসের শেষ ওভার করতে এসে মেহেদি মিরাজকে (৪) ইমরুল কায়েসের তালুবন্দি করে মুস্তাফিজ পেয়ে যান পঞ্চম উইকেট। ওভারের শেষ বলেও একটি উইকেট পড়েছে। তবে মৃত্যুঞ্জয় (১) রান-আউট হওয়ায় সেটি মুস্তাফিজের নামের পাশে যুক্ত হচ্ছে না। ৪ ওভারে ৫ উইকেট নিতে দ্য ফিজের খরচ ২৭ রান। কর্তিত ১৮ ওভারে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ১৩৮ রান। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন নাহিদুল এবং তানভীর।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ