লালপুরে মুক্তিযোদ্ধার লাশ দাফনে আ.লীগ নেতার বাধা

লালপুর প্রতিনিধি:

নাটোরের লালপুর উপজেলার ওয়ালিয়া ইউনিয়নের নান্দ রায়পুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমান উল্লাহ্’র লাশ দাফনে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এনিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর গত ১৬ জুলাই অভিযোগ করেছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আমিরুল ইসলাম বাবু। তবে এ অভিযোগকে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র মূলক বলে দাবি করেছেন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি রফিকুল ইসলাম।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (১৫ জুলাই) ওয়ালিয়া ইউনিয়ন ও ১০ নং কদিমচিলান ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমান উল্লাহ্ মারা যান। আমান উল্লাহ’র মৃত দেহ নান্দ রায়পুর পশ্চিম পাড়া সামাজিক কবরস্থানে দাফন না করে মৃত্যুর পূর্বে ওসিয়ত অনুযায়ী পার্শ্ববর্তী নান্দ রায়পুর মধ্য পাড়া কবরস্থানে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মাননার মাধ্যমে দাফন করা হয়। দাফন পরবর্তী সময়ে পশ্চিমপাড়া কবরস্থানে পিতার লাশ দাফন করতে বাধা দেন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি রফিকুল ইসলাম এমন অভিযোগ তুলেন আমান উল্লাহ্’র ছেলে বাবু।

আমিরুল ইসলাম বাবু জানান, আমার পিতার ওসিয়তের ব্যাপারে বলতে পারবো না। আমরা পশিচমপাড়া কবরস্থানের সদস্য, নিয়মিত চাঁদা দিয়ে আসছি। অথচ ঐ কবরস্থানে আমার পিতার মরদেহ দাফনে বাধা দেয় আ’লীগ নেতা রফিকুল। এজন্য পার্শ্ববর্তী অন্য কবরস্থানে দাফন করেছি। স্বাধীন দেশে একজন মুক্তিযোদ্ধার লাশ দাফনে বাধা প্রদান এটা সন্তান হিসেবে মানতে পারি নি এজন্য অভিযোগ করেছি।

অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা পারিবারিক ভাবে আওয়ামীলীগ পরিবারের সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধের স্ব-পক্ষের চেতনায় বিশ্বাসী। কাজেই একজন মুক্তিযোদ্ধার অসম্মান হোক, সেটা কখনোই চাইবো না। আমি কবরস্থান কমিটির সভাপতি বা সেক্রেটারী নই। কমিটির সেক্রেটারী মুক্তিযোদ্ধা আমান উল্লাহ্’র ছেলে বাবু নিজে। এছাড়া আমার সাথে কবরস্থানে দাফন বিষয়ে কারো কোন কথা হয় নি। বরং অন্য কবরস্থানে দাফনের ব্যবস্থা হচ্ছে শুনে আমি, কবরস্থান কমিটির সভাপতি সহ অনেকেই আমাদের সামাজিক কবরস্থানে দাফনের জন্য বলেছি। মৃত্যুর পূর্বে তিনি ওসিয়ত করেছিলেন, এ জন্য উনাকে ঐ কবরস্থানে দাফন করেছে তারা। এরপরেও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ কেন করছে বুঝলাম না।

নান্দ রায়পুর পশ্চিমপাড়া কবরস্থানের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মুক্তিযোদ্ধা আমান উল্লাহ্ আমার সমাজের লোক। নিয়ম অনুযায়ী আমাদের কবরস্থানে উনার দাফন হওয়ার কথা। কিন্তু উনি মৃত্যুর পূর্বে ওসিয়ত করে যাওয়ার কারনে তার পরিবারের পক্ষ থেকে মধ্যপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

নান্দ রায়পুর মধ্যপাড়া কবরস্থানের প্রধান সমন্বয়ক সাহেব আলী বলেন, মৃত্যুর ২ দিন পূর্বে আমান উল্লাহ্ নিজেই আমার নিকট আমাদের কবরস্থানে দাফনের জন্য জায়গা চান। তিনি মারা গেলে তার ছেলে বাবু আমার নিকট তার বাবার ওছিয়ত অনুযায়ী কবরের জায়গা চায়। সে মোতাবেক কবরস্থান কমিটির সভাপতির সাথে কথা বলে আমাদের কবরস্থানে দাফন করা হয়।

ওয়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান বলেন, আমি জানাযায় ছিলাম। মুক্তিযোদ্ধা আমান উল্লাহ্ পশ্চিমপাড়া সমাজের লোক হলেও উনার ওছিয়ত অনুযায়ী নান্দ রায়পুর মধ্যপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মুল বানীন দ্যুতি জানান, এ সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি সঠিকভাবে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবো।

স/অ