লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি:
আগামী ১১ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ‘দূর্গোৎসব’। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিমা বানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন লালপুরের প্রতিমা শিল্পীরা।
শনিবার (৪সেপ্টেম্বর) নাটোরের লালপুরের মন্দিরগুলো ঘুরে দেখা যায়, প্রতিমা শিল্পীদের ব্যস্ততার চিত্র। শিল্পীরা অতিযত্নে দূর্গা, সরস্বতী, কার্তিক, লক্ষ্মী, গণেশ, অসুর ও শিবের মূর্তি তৈরি করছেন। এক সপ্তাহ আগে থেকে মণ্ডপে মূর্তি নির্মাণের অবকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। শিল্পীদের নিপুণ আঁচড়ে প্রতিমাগুলো প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে।
পৌরহিত শ্রী সুবোধ কুমার মজুমদার বলেন, এই বছর দেবী দূর্গার আগমন ঘোটকে, যার অর্থ ছত্রভঙ্গ (সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির এলোমেলো অবস্থা, যুদ্ধ-বিগ্রহ, অশান্তি, বিপ্লব ইত্যাদির সংকেত)। উমা কৈলাসে ফিরবেন দোলায় যার অর্থ মড়ক কিংবা মহামারী।
জোতদৈবকী গ্রামের প্রতিমাশিল্পী শ্রী সুকুমার চন্দ্র হালদার বলেন, এ বছর তিনি ১৩টি প্রতিমা তৈরির চুক্তি নিয়েছেন। প্রতিটি প্রতিমা তৈরিতে সর্বনিম্ন ১৬ থেকে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকার চুক্তি করেছেন। তাঁর সাথে সঞ্জিত কুমার হালদারসহ আরো ৩ জন প্রতিমা তৈরী করার কাজ করেন।
প্রতিমা নির্মাণকারী সঞ্জিত কুমার হালদার বলেন, একটি বড় মূর্তি তৈরি করতে সময় লাগে সাত থেকে ১০ দিন। অন্যদিকে এক একটি ছোট মূর্তি চার থেকে ছয় দিনে সম্পন্ন করা যায়। বর্তমানে মূর্তি তৈরীর প্রাথমিক কাজ চলছে। রঙের কাজ শেষ করে নির্দিষ্ট সময়ে পূজা মণ্ডপের প্রতিমা বসানো হবে।
বিলমাড়িয়া ঘোষপাড়া গ্রামের প্রতিমা নির্মাতা অসিত বিশ্বাস বলেন, ধরণ অনুযায়ী প্রতিটি মূর্তি তৈরিতে নিচ্ছেন ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। তিনি ৮টি প্রতিমা তৈরি করছেন। প্রতিমা তৈরিতে এঁটেল ও বেলে মাটি ছাড়াও বাঁশ-খড়, ধানের কুঁড়া, দড়ি, লোহা, পাট, কাঠ, রঙ, বিভিন্ন রঙের সিট ও শাড়ি-কাপড়ের প্রয়োজন হয়। সারা বছর অপেক্ষার পর এ সময় ব্যস্ততা বেড়ে যায়। বিভিন্ন ব্যায় বাড়লেও সে হারে প্রতিমা তৈরীর মজুরি বাড়েনি।
উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার ভদ্র বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ বছর উপজেলায় ৪২টি মন্দিরে দূর্গা পূজার উদযাপিত হবে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা। সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনের জন্য প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও ভ্রাম্যমাণ দল তৎপর থাকবে।
স/আর