লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত রাজশাহীর ৬০ হাজার গরু

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীতে ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে ভাইরাসজনিত গবাদি পশুর ‘লাম্পি স্কিন রোগ’। জেলার সব উপজেলায় এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে অনেক গবাদি পশুর মৃত্যুও হচ্ছে। এ পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৬০ হাজার গরু আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় গত এক মাসে কয়েক হাজার গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এতে বেশ কিছু গরু অনাহারে থেকে দুর্বল হয়ে মারা গেছে। পুঠিয়া উপজেলাতেও আক্রান্ত হয়েছে কয়েক হাজার গরু।

খামারিরা জানান, এ রোগটি তাদের কাছে একেবারেই নতুন। প্রথমে গরুর শরীরে বিভিন্ন স্থানে গুটি গুটি হয়ে ফুলে যায়। পরে গুটিগুলোতে ইনফেকশন হয়ে দগদগে ঘা সৃষ্টি হয়। ক্ষতস্থান থেকে চামড়া ও মাংস পচে যাচ্ছে। শরীরে উচ্চমাত্রায় জ্বর ও ব্যথা থাকায় এ সময় খাওয়া বন্ধ করে গরুগুলো নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। আক্রান্ত গরু দুর্বল হয়ে অনেক সময় মারাও যাচ্ছে।

এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, মারা যাওয়া গরুগুলো লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত ছিল। তবে এই রোগের কোনো ভ্যাকসিন না থাকায় সাধারণ চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু গরু দুর্বল হয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে মারা যায়।

পুঠিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান বলেন, এটা ভাইরাসবাহিত রোগ। মশা-মাছির মাধ্যমে এই রোগ ছড়াচ্ছে। মশার থেকে গবাদি পশুকে দূরে রাখতে পারলে গবাদি পশু এই রোগে আক্রান্ত হবে না। আক্রান্ত হওয়ার শুরুতেই চিকিৎসা নিতে পারলে পশুর মৃত্যুহার কমানো সম্ভব।

রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হুমায়ুন কবীর বলেন, এ বছরই নতুন করে এই রোগ ব্যাপক হারে ছড়িয়েছে। এই রোগের কোনো ভ্যাকসিন নেই। এই রোগে মৃত্যুহার খুবই কম। তবে অন্যান্য রোগে দুর্বল হয়ে থাকলে মারা যেতে পারে। তিনি আরও জানান, রাজশাহী জেলায় ছয় লাখ গরু রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৬০ হাজার গরু এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পক্ষ থেকে তদারকি করা হচ্ছে। আক্রান্ত পশুর যত্ন ও খামার পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া অন্য কোনো চিকিৎসা নেই। তবে বেশি জ্বর থাকলে শুধুই প্যারাসিটামল সেবন করানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।