র‌্যাবের তালিকায় নিখোঁজ বড়াইগ্রামের ফারুক ঢাকায় কর্মরত!

নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর:
র‌্যাবের পুরস্কার ঘোষিত ২৬১ জনের নিঁখোজ তালিকায় থাকা নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জোয়াড়ী গ্রামের ওমর ফারুক (১৮) জঙ্গি বা নিখোঁজ নয় বলে দাকি করেছে তার বাবা নুরু মিয়া। ভালবেসে বিয়ে করে কয়েকদিন নিঁখোজ ছিলো বলে জানান তিনি।

সোমবার সকালে সরেজমিনে ওমর ফারুকের বাড়িতে গিয়ে তার বাবা নুরু মিয়ার সাথে কথা হয়। তিনি সিল্কসিটি নিউজকে জানান, জীবিকার প্রয়োজনে ২০০৯ সাল থেকে স্ত্রী ফাতেমা বেগম, দুই ছেলে ওমর ফারুক, ওসমান মিয়া ও একমাত্র মেয়ে নুরুন্নাহারকে নিয়ে ঢাকার বনানী এলাকায় থাকতেন। সেখানে রেল লাইনের ধারে একটি অস্থায়ী হোটেল ছিল। ফাতেমা বেগম রান্না করে দিতেন তিনি বিক্রি করতেন। এ সময় তিন ছেলেমেয়ে বারিধারা নতুন বাজার কওমী মাদরাসায় কিছুদিন পড়া লেখা করেছে। ২০১২ সালে গ্রামের বাড়ি এসে চাচার বাড়িতে উঠে ওমর ফারুক। পরে উপজেলার কৈডিমা উচ্চ বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখায় নবম শ্রেণীতে ভর্তি হয়। সেখান থেকে ২০১৪ সালে এসএসসি পাশ করে পুনরায় ঢাকা গিয়ে বাবার হোটেলে কাজ করার পাশাপাশি একটি পত্রিকা অফিসে নিরাপত্তা কর্মী হিসাবে কাজ শুরু করে।

এ সময় মৌ নামে একটি মেয়ের সাথে সে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ২০১৫ সালের শুরুর দিকে প্রেমের টানে মৌকে নিয়ে ওমর ফারুক পালিয়ে যায়। এরপর সে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। তার বাবাও অভিমান করে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেননি। এ সময় তার অফিসের পক্ষ থেকে থানায় একটি জিডি করা হয়েছিল। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে তার মা ফাতেমা বেগম মারা গেলে দাফনের সময় তার নানার বাড়ি ভোলার দৌলতখানে বউসহ মাটি দিতে গিয়েছিল। তারপর থেকে সে স্ত্রীসহ ঢাকায় থেকে পুনরায় একই অফিসে চাকুরীরত আছে। সে কোন দিনই জঙ্গী নয়। একই পত্রিকা অফিসে কর্মরত ওমর ফারুকের চাচা নুর ইসলাম জানান, ওমর ফারুকের সাথে তার নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। তার নাম র‌্যাবের তালিকায় দেখে বিস্মিত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
তার দাদী জাহানারা বেওয়া জানান, গত রোজার ৫-৬ দিন আগে তিনি অপারেশন করিয়েছেন। এ সময় ওমর ফারুক স্ত্রীকে নিয়ে তাকে দেখতে গ্রামের বাড়িতে এসেছিল। রোজার ঈদে আসেনি, তবে কোরবানীর ঈদে বাড়িতে এসেই ঈদ করবে। স্থানীয় প্রতিবেশী কাঁকন সরদার (৫৫) বলেন, নুরু মিয়ার পরিবার সবাই শান্তশিষ্ট ভাল মানুষ তারা। ওমর ফারুকসহ তারা কেউই জঙ্গী হওয়ার মত মানুষ নয়।
কৈডিমা উচ্চ বিদ্যালয়েল প্রধান শিক্ষক মহসীন আলী বলেন, বিদ্যালয়ে পড়া কালিন ওমর ফারুকের মধ্যে কোন অস্বাভাবিক আচরণ বা কোন উগ্রতা দেখা যায় নাই। সে একজন ভদ্র ও ভাল ছেলে।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, ওমর ফারুক বিষয়ে তার কাছে কোন তথ্য নেই। র‌্যাবের তালিকা দেখে প্রথম তার জানা। তবুও এ বিষয়ে খোঁজ নেয়া হবে।
স/মি