রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে চাপ দিন

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে চাপ দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। ভারতের দিল্লিতে মঙ্গলবার টাউন হল বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। টাইমস অব ইন্ডিয়া এ তথ্য জানিয়েছে।

গুতেরেস বলেন, ভারত কী করতে পারে? প্রথমত, বাংলাদেশকে সমর্থন করতে পারে, দেশটি বড় মানবিক বিপর্যয় মোকাবেলা করছে। দ্বিতীয়ত, ভারত মিয়ানমারকে চাপ দিতে পারে। আর এটা কেবল রোহিঙ্গাদের গ্রামে অবকাঠামো নির্মাণের জন্য নয়, বরং রোহিঙ্গারা সেখানে যেন নিরাপদে থাকতে পারে তার জন্যও।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের মতো দেশকে ১০ লাখের বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে হয়েছে, এটা অগ্রহণযোগ্য। আমি মনে করি, এখানে উদারতা সমৃদ্ধির বিপরীত অনুপাতে হয়েছে। সারা বিশ্বে রোহিঙ্গাদের মতো বৈষম্যের শিকার হওয়া অন্য কোনো জাতিকে আমি দেখিনি।

বর্তমান পরিস্থিতিতে এ অঞ্চলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কাও করেন গুতেরেস। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীগোষ্ঠীরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারে। ভাগ্যক্রমে রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েনি এবং আমরা এ পর্যন্ত তা এড়াতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু বৈষম্য ও অমীমাংসিত সমস্যা সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলোকে তাদের দিকে টানতে সহজতর করে।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, বর্তমান বিশ্ব আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধপরবর্তী বিশ্ব সম্পূর্ণ আলাদা। তাই জাতিসংঘকেও বদলাতে হবে। তবে চাওয়ার মতো সংস্কার করতে আমি পারব না, কারণ আমার একার এতটা ক্ষমতা নেই। তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য একমত না হওয়ার কারণে বিশ্বব্যাপী অনেক সমস্যার সমাধান হয় না। এতে নিরাপত্তা পরিষদ অচল হয়ে পড়েছে।

দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরুর আহ্বান : মিয়ানমারের টালবাহানার জন্যই এতদিনেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি। এ নিয়ে জাতিসংঘে বিস্তারিত তুলে ধরে বাংলাদেশ। তবে দেশটি সেখানে দাবি করে, বাংলাদেশের জন্যই প্রত্যাবাসন শুরু হয়নি। মিয়ানমারের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান ইউ উইন মরা মঙ্গলবার মিয়ানমার টাইমসকে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে একে অন্যকে দোষারোপ করার চেয়ে সমঝোতা স্মারক অনুসারে বাংলাদেশের উচিত দ্রুত প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন করা। সব থেকে ভালো হয়, আমি আহ্বান জানাই উভয় দেশ সমঝোতা অনুসারে দ্রুত বাস্তবায়ন শুরু করুক।’ মরা আরও বলেন, ‘কে বাস্তবায়ন করছে না, কার জন্য বিলম্বিত হচ্ছে- এসব বলার চেয়ে উভয় দেশের দ্রুত সমঝোতা স্মারক বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে হবে। তাহলেই প্রত্যাবাসন শুরু হয়ে যাবে।’