রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে আইসিসির সঙ্গে চুক্তি করবে বাংলাদেশ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত করতে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের (আইসিসি) কাছে অনুমতি চেয়েছেন এই আদালতের প্রধান কৌঁসুলি ফেতু বেনসুদা। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে চান আইসিসি। বাংলাদেশে তদন্ত ও আনুষঙ্গিক সহায়তার জন্য ওই চুক্তি করতে হবে আইসিসিকে। এ জন্য আগামী ১৬ জুলাই আইসিসির ডেপুটি প্রসিকিউটরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘পৃথিবীর যেখানেই আইসিসি তদন্ত করেছেন, ওই দেশগুলোর সঙ্গে চুক্তি করতে হয়েছে তাদের। এটি তদন্ত করার একটি পূর্বশর্ত।’

কী থাকবে ওই চুক্তিতে, জানতে চাইলে সরকারের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘যারা তদন্ত করবেন, তাদের হাতে তদন্ত করার অনুমোদনসহ অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় থাকবে।’

অন্যান্য কী বিষয় থাকতে পারে, জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আইসিসির নিজস্ব কোনও চাহিদা থাকতে পারে এবং আমরা সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবো।’

উদাহরণ দিয়ে সরকারের এই কর্মকর্তা বলেন, আইসিসি হয়তো সাক্ষী নিরাপত্তা (উইটনেস প্রটেকশন) চাইতে পারেন, যেটি আমাদের আইনে নেই। সে ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো আমাদের বিবেচনা করতে হবে।

প্রসঙ্গত, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের সময়ে শুধু ওই মামলাগুলোর সাক্ষীদের নিরাপত্তা দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।

আইসিসি প্রতিনিধি দল
তদন্ত শুরু করার আগে দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছেন আইসিসি। বাংলাদেশে মাঠপর্যায়ের অবস্থা কী এবং তদন্ত করার পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার জন্য গত মার্চে প্রথম দলটি ঢাকা সফর করে। ওই সময়ে প্রতিনিধি দলটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রনালয়সহ সরকারের অন্যান্য এজেন্সিগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে।

বিষয়টি নিয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এবারও তারা পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন।’ তার মতে, আইসিসির প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশ সহায়তা দিতে প্রস্তুত। কারণ দায়বদ্ধতা ছাড়া রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান কঠিন বলে মন্তব্য করেন ওই কর্মকর্তা।

তদন্ত শুরুর অনুমতি
এরআগে, চলতি মাসের (জুলাই) প্রথম সপ্তাহে আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি ফেতু বেনসুদা রোহিঙ্গাদের নির্বাসন-নির্যাতনের অপরাধ তদন্ত করার অনুমতি চেয়েছেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানবতাবিরোধী অপরাধগুলোর অন্তত একটি অংশ, যা বাংলাদেশের এলাকায় ঘটেছে, এই সব ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলোর তদন্ত শুরু করার জন্য আইসিসির বিচারপতিদের কাছে অনুমতি চেয়েছেন।

রাখাইনে ৯ অক্টোবর ২০১৬ থেকে শুরু করে যেসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, সেগুলোই এই তদন্তের অন্তর্ভুক্ত।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল রোহিঙ্গাদের নির্বাসনের বিষয়ে এখতিয়ারের প্রশ্নে আইনি নির্দেশের জন্য আইসিসিরি বিচারপতিদের কাছে অনুরোধ করেছিলেন ফেতু বেনসুদা।

আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি তার আবেদনে বলেন, সাত লাখ রোহিঙ্গাকে জোর করে তাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশে নির্বাসিত করেছে, সেটি বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এটি বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে এজন্য যে, ২০১৭ সালের রাখাইনে রোহিঙ্গারা নির্যাতনের শিকার হয়।