রোহিঙ্গা নারীরা ধর্ষিত হয়েছেন : এইচআরডব্লিউ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ন করেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

সোমবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নারী- এমন কি ১৩ বছর বয়সি কিশোরীদেরও ধর্ষণ করেছে সরকারি বাহিনীর সদস্যরা। জাত ও ধর্মের ভিত্তিতে পরিকল্পিতভাবে তারা নিগৃহীত হয়েছে। ২০১৬ সালের শেষের দিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা অভিযান চালানোর সময় এসব ঘটনা ঘটে।

এইচআরডব্লিউ মিয়ানমার সরকারের প্রতি পরিকল্পিত নিপীড়ন ও নিগৃহের এসব অভিযোগ তদন্তে একটি স্বাধীন ও আন্তর্জাতিক কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯ অক্টোবর থেকে মধ্য ডিসেম্বর পর্যন্ত মংডু জেলার কমপক্ষে নয়টি গ্রামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যরা ধর্ষণ, গণধর্ষণ, জোরপূর্বক দেহ তল্লাশি এবং যৌন নিপীড়নে শামিল ছিল।

ওইস গ্রামের বেঁচে ফেরা ব্যক্তি ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সংঘবদ্ধভাবে তাদের আক্রমণ চালিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের কেউ কেউ নারীদের ধরে রাখত অথবা মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে রাখত, যখন অন্য কেউ তাদের ধর্ষণ করত।  ইউনিফর্ম, ব্যাচ ও আর্মব্যান্ড দেখে তাদের শনাক্ত করতে পেরেছেন তারা। এ ধরনের নিগৃহের সময় জাত ও ধর্মের ভিত্তিতে তাদের হেনস্তা ও হুমকি দেওয়া হতো বলে জানিয়েছেন নিপীড়নের শিকার নারীরা।

এইচআরডব্লিউয়ের জ্যেষ্ঠ গবেষক প্রিয়াঙ্কা মোতাপার্থি বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা নারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর এই ভয়াবহ আক্রমণের ঘটনা নারীদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সহিংসতার দীর্ঘ ও কুরুচিরকর ইতিহাসে নতুন অধ্যায় যোগ করল।’ তিনি আরো বলেন, ‘এসব অপরাধের জন্য সেনা ও পুলিশ কমান্ডারদের দায়ী করা উচিত, কারণ এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের থামাতে বা শাস্তি দিতে পারেননি তারা।’

ডিসেম্বর ২০১৬ ও জানুয়ারি ২০১৭ পর্যন্ত এইচআরডব্লিউ-এর গবেষকরা বাংলাদেশে রোহিঙ্গা আশ্রয়কেন্দ্রে ১৮ জন নারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, যাদের মধ্যে ১১ জন যৌন নিগৃহীত।  ১০ জন পুরুষেরও সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ জন নারী-পুরুষ তাদের সামনে তাদের স্ত্রী, বোন, মেয়েকে ধর্ষিত হতে দেখেছেন। এইচআরডব্লিউ এ ধরনের ১৮টি ঘটনা নথিভুক্ত করেছে।

 

 

সূত্র :রাইজিংবিডি