রোহিঙ্গাদের বর্ণময় অতীত বিষয়ে জেনে নিন ৭টি তথ্য

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

প্রতিবেশী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলমান রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন এখন বিশ্ব সংবাদ মাধ্যমগুলোর শিরোনাম। কিন্তু রোহিঙ্গাদের ইতিহাস সম্পর্কে আমরা কতোটুকু জানি? আসুন, রোহিঙ্গা জাতির প্রায় ভুলে যাওয়া ইতিহাসের কিছু তুথ্য জেনে নেওয়া যাক-

১. এখনকার নির্যাতীত-নিপীড়িত-বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের আবাসভূমি আরাকান একসময় ছিল স্বাধীন রাজ্য। ১৭৮৪ সালে বার্মার রাজা বোডপায়া আগ্রাসন চালিয়ে এটি দখল করে বার্মার অধীন করদ রাজ্যে পরিণত করেন।

২. আরাকান রাজ্যের রাজা বৌদ্ধ হলেও তিনি মুসলমান উপাধি গ্রহণ করতেন। তার মুদ্রাতে ফার্সি ভাষায় লেখা থাকতো কালেমা।

৩. আরাকান রাজ দরবারে কাজ করতেন অনেক বাঙালি মুসলমান। বাংলার সাথে আরাকানের ছিল গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক।

৪. ধারণা করা হয়, রোহিঙ্গা নামটি এসেছে আরাকানের রাজধানীর নাম ম্রোহং থেকে: ম্রোহং>রোয়াং>রোয়াইঙ্গিয়া>রোহিঙ্গা। তবে মধ্য যুগের বাংলা সাহিত্যে আরাকানের উল্লেখ রয়েছে রোসাং নামে।

৫. ১৪০৬ সালে আরাকানের ম্রাউক-উ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা নরমিখলা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে বাংলার তৎকালীন রাজধানী গৌড়ে চলে আসেন। গৌড়ের শাসক জালালুদ্দিন শাহ্ নরমিখলার সাহায্যে ৩০ হাজার সৈন্য পাঠিয়ে তাকে বিতারণকারী বর্মী রাজাকে উৎখাতে সহায়তা করেন।

নরমিখলা ইসলাম কবুল করেন এবং মোহাম্মদ সোলায়মান শাহ্ নাম নিয়ে আরাকানের সিংহাসনে বসেন। ম্রাউক-উ রাজবংশ ১০০ বছর আরাকান শাসন করেছে। এর ফলে সেখানে মুসলিম ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী, কবি, শিল্পীদের পৃষ্ঠপোষকতা বৃদ্ধি পায়।

৬. মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যচর্চ্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল রোসাং রাজ দরবার। মহাকবি আলাওল রোসাং দরবারের রাজ কবি ছিলেন। তিনি লিখেছিলেন মহাকাব্য পদ্মাবতী। এছাড়া সতী ময়না ও লোর-চন্দ্রানী, সয়ফুল মুল্ক, জঙ্গনামা প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ রচিত হয়েছিল রোসাং রাজদরবারের আনুকূল্যে, পৃষ্ঠপোষকতায়।