নিজস্ব প্রতিবেদক:
দামি একটি সাদা রংয়ের এ্যাপাচি মোটরসাইকেল চালিয়ে তিনি রেলস্টেশনের গাড়ি পার্কিং স্থান থেকে সরাসরি প্লাটফর্মে উঠে পড়লেন। এরপর প্লাটফর্মে মোটরসাইকেল স্ট্যান্ড করে দেখা করলেন ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনের গার্ডের সঙ্গে।
সেখান থেকে আরেকটি বগিতে গিয়ে একজনের সঙ্গে দেখা করে ফিরলেন মোটরসাইকেল চালিয়েই।
- ফেরার সময় স্টেশনের বহির্গামী গেটে নিরাপত্তা কর্মী ও বুকিং সহকারীর সঙ্গে কথা বলে আবার মোটরসাইকেল চালিয়ে প্রধান ফটক দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করলেন। তবে এবার নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে ঘিরে ধরলে তিনি পরিচয় দিলেন রেলের মহাপরিচালকের ভাগ্নে বলে।
এমন ঘটনাটিই ঘটেছে রবিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে। রাজশাহী রেল স্টেশনের উপর মোটরসাইকেল বা সকল ধরনের যান চালানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কারণ এতে যাত্রীরা দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন।
এছাড়াও স্টেশনের শৃংখলা বিঘ্নিত হয়। অথচ এধরনের কর্মকাণ্ড বে-আইনি হলেও প্রায়ই করে থাকেন মেহেদি নামের ২৪ বছরের এক যুবক যিনি বাংলাদেশ রেলওয়ের মহা পরিচালক (ডিজি) আমজাদ হোসেনের কথিত ভাগ্নে। তার বাবার নাম বদরুল ইসরাম। যিনি রেলের ঠিকাদারী পেশায় নিয়োজিত।
রেলের কর্মচারীদের অভিযোগ, মেহেদি নামের ওই যুবক তার মামা রেলের ডিজির নাম ভাঙ্গিয়ে রেল স্টেশনে এসে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড করে থাকেন। সাধারণ বা ভিআইপি যাত্রীরা টিকিট না পেলেও তাকে টিকিট দিতে হয়। প্রায় দিনই তার টিকিট প্রয়োজন হয়। কখনো টিকিট না থাকলে চাকরি খেয়ে নেয়ার হুমকি দেয়া হয়।
- তারই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রায় বছর খানেক আগে স্টেশন সুপার আব্দুল করিমকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। এরপর তাকে বদলি করা হয় ইশ্বরদীতে।
পরবর্তিতে রাজশাহী স্টেশনে বদলি হয়ে আসা অনান্য সুপার বা বুকিং সহকারী সবাই তাকে ভয় করে চলেন।
- তার জন্য বিশেষভাবে টিকেট বরাদ্ধ রাখা হয়। কেবল টিকিট নিয়েই তিনি ক্ষান্ত নয়। তিনি বিনা টিকিটের যাত্রী ও ভাড়াবিহীন মালামাল পরিবহনের জন্য প্রায়ই বিভিন্ন ট্রেন ব্যবহার করে থাকেন।
তার মামার (ডিজি) নাম ভাঙ্গিয়ে নানান উপকরণ পাঠান গার্ডব্রেকসহ বিভিন্ন কামরায়। ট্রেনের কোনো কর্মচারী যদি তার অন্যায় আবদার রাখতে অপারগতা প্রকাশ করে, তাহলে তার জন্য নেমে আসে ভয়াবহ মানষিক নির্যাতন। হয় বদলি নয়তো সাময়িকভাবে বরখাস্ত হতে হয় এমন নজিরও রয়েছে।
- অতি সম্প্রতি একটি মাছের কার্টুন গার্ডব্রেকে দেয়া নিয়ে ঘটনাক্রমে ওদিন চলন্ত ট্রেনেই একজন গার্ডকে সাসপেন্ড করা হয়। পরবর্তিতে ডিজি আমজাদ হোসেন প্রকৃত ঘটনা জানতে পেরে ওই গার্ডকে দায়িত্বে পূন:বহাল করেন।
মেহেদীর এমন দাপটে অতিষ্ঠ হয়েও খুশি রাখতে তাকে দেখামাত্র রেল কর্মচারীরা তার সেবায় নিয়জিত হয়ে পড়েন।
অভিযোগে আরো জানা যায়, রেলের নিয়োগ ও টেন্ডারের ক্ষেত্রেও মেহেদি তার মামার নাম ভাঙ্গিয়ে কাজ হাসিলের চেষ্টা করেন।
এ ব্যাপারে মেহেদির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার ভুল স্বীকার করে খবরটি না ছাপানোর অনুরোধ জানান।
তথ্য সূত্র: এটিএন বাংলা চ্যানেলের রাজশাহী প্রতিনিধি সুজা উদ্দিন ছোটনের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া।