রেলগেটের বটগাছটি যেন যাত্রী ছাউনি

শফিক আজম:

রাজশাহীর বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থান গুলো প্রদর্শন তো অনেকেই করে থাকেন। স্থানীয়রা কখনো কি দেখেছেন রাজশাহীর ঠিক প্রাণকেন্দ্রে এমন নান্দনিক বস্তুটি মাথা চেড়ে আছে?  তাও আবার হাজারো মানুষকে আবৃত করে রেখেছে? যারা দেখেননি  চলে আসুন রাজশাহীর রেলগেটে। একটি মিনিটের জন্য হলেও পরম আরাম অনুভূত হবে। বলছিলেন নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সেলিম সারোয়ার খান।

গত কয়েকদিনে রাজশাহীতে ভ্যাপসা গরম পড়ছে। ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ট হয়ে মানুষ ক্লান্তি দূর করতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ডাব, আখের রস আবার অনেকে ফলের শরবত খাচ্ছেন। অনেকেই একটু ছাঁয়া পেলেই দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন। এমনই এক চিত্র চোখে পড়লো মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র রেলগেট এলাকায়। এখানে রয়েছে একটি মাঝাড়ি আকারের বট গাছ।

প্রতিদিন এখানে সমাগম হয় হাজারো মানুষের। আসা ও যাওয়ার পথে একটু স্বস্তির নিশ্বাস নিতে গাছটি অবলম্বন হয়ে দাঁড়ায়। রাজশাহীর অন্তবর্তী বিভিন্ন উপজেলায় যেতে সেখানে যানবাহনের অপেক্ষায় অবস্থান নেন অসংখ্য যাত্রী। আবার ক্লান্ত হয়ে পথচারীরাও একটু বসে জিরিয়ে নেন বটগাছের ছায়ায়।

এদিকে রাজশাহী থেকে উত্তারাঞ্চলের জেলাগুলোতে  যাওয়া যাত্রীরা ভীড় জমান রেলগেট এলাকায়। গন্তব্যের যানবাহন না আসা পর্যন্ত এই বটগাছই হয়ে যায় তাদের আশ্রয়াস্থল। গন্তব্যের বাহন যতক্ষণ না আসে ততক্ষণে তীব্র গরম থেকে রক্ষা পাওয়ার অবলম্বণ হলো এই গাছটি।

সোমবার রেলগেট এলাকায় গিয়ে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেয়া কয়েক যাত্রীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তীব্র গরমের প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এ গাছটির ছায়ায় বসে থাকেন তারা। অনেকেই আবার কাজ শেষে বিশ্রাম নিতে হাজির হয়ে যান বটের ছায়ায়। তাদের মতে ফুটপাতের জায়গা দখল করে অনেকে বসে থাকায় যাত্রীদের বসার জায়গা হয় না। তীব্র গরমে রোদে পুড়ে কোথাও থেকে আসার পর এই বটগাছটি শান্তির ছায়া দেয় বলে এখানে  আসেন তারা।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার হাটগাঙ্গোপাড়া এলাকার যাত্রী আশরাফুল ইসলাম সিল্কসিটিনিউজকে বলেন, ব্যবসায়িক কাজে প্রতিদিন খুব সকালে শহরে আসতে হয়। যে পরিমান গরম পড়ছে তাতে করে শরীর খুব ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই বাসায় যাওয়ার আগে এখানে ১৫-২০ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে তারপর গাড়িতে উঠি। গাছটা আছে বলেই হাজারো মানুষ শান্তির নিশ্বাস নিতে পারে।

মোহনপুরগামি আরেক যাত্রী তারিক আজিজ বলেন, গাছের ছায়ায় বসে থাকতে ভালো লাগছে। এই জায়গাটি আরো সৌন্দর্যবর্ধন করে যাত্রীছাউনির ব্যবস্থা করলে আরো ভালো হয়।

শুধু দিনে নয় রাতেও এই বট গাছের বেশ কদর রয়েছে। সন্ধ্যা পার হলেও যখন ভ্যাপসা গরমের আমেজ থেকে যায় তখন গাছটি যেন প্রকৃতির আশির্বাদ স্বরুপ মৃদু বাতাস বয়ে নিয়ে আসে। এমনটাই বলছিলেন রেলগেট এলাকার পুলিশ বক্সের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মোফাক্কারুল ইসলাম।

তিনি বলেন,গাছটা বড় না হলেও বেশ ছায়া দেয়। এ গাছটির নিচে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ক্লান্ত হয়ে বিশ্রামের জন্য আসেন। আমরাও সেখানে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে কথোপকথন করি। অনেক ভালো লাগে প্রকৃতির একটা বিশাল অবদান বলা চলে।

স/আ