রুয়েট প্রশাসনে কোন্দল, উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের নেতৃত্বে পৃৃথকভাবে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

গত ৩ আগস্ট থেকে আজ পর্যন্ত রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য দিয়ে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) চলছে। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ উপাচার্য না হওয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মধ্যে আন্তঃকোন্দল প্রকাশ্যে। এমনকি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচিও আলাদাাভাবে পালন করতে দেখা গেছে প্রশাসনের মধ্যে। এতে একদিকে ছিলেন রুয়েটের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্যানেল ও অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্যানেল।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, রুয়েটের সদ্য সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম সেখের মেয়াদ শেষ হয় গত ৩০ জুলাই। এরপর ৩ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় রুয়েটের ফলিত বিজ্ঞান ও মানবিক অনুষদের ডিন ড. সাজ্জাদ হোসেনকে রুয়েটের ভারপ্রাপ্ত ভিসির দায়িত্ব দেয়। কিন্তু অধ্যাপক সাজ্জাদ প্রকৌশল শিক্ষাবিদ না হওয়ায় বিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতির নেতারা এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তখন থেকেই রুয়েট প্রশাসনে ফাটল ধরে।

রুয়েট সূত্রে আরও জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়টির আইন-২০০৩-এর ধারা ১০ (১) মোতাবেক- বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরের দায়িত্ব যিনি পাবেন তাকে অবশ্যই ‘প্রকৌশল শিক্ষা ও গবেষণায় সম্পৃক্ত একজন জ্যেষ্ঠ প্রকৌশল শিক্ষাবিদ’ হতে হবে। কিন্তু বর্তমান ভারপ্রাপ্ত ভাইস-চ্যান্সেলরের এই যোগ্যতা নেই। কেননা, ফলিত বিজ্ঞান ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেনকে রুয়েটের ভারপ্রাপ্ত ভিসির দায়িত্ব দেয়।

রুয়েটের আইন অনুযায়ী, তিনি প্রকৌশল শিক্ষাবিদ নন। রুয়েটে প্রকৌশল শিক্ষাবিদকে ভারপ্রাপ্ত ভিসির দায়িত্ব না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে রুয়েট শিক্ষক সমিতি। গত ৭ আগস্ট রুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. ফারুক হোসেন ও সাধরণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রবিউল আওয়াল এই নিয়ে লিখিত একটি প্রতিবাদও জানিয়েছিলেন। তখন থেকেই রুয়েট প্রশাসনে ফাটল দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ১২টা ১ মিনিটে রুয়েট শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে শহীদ মিনারের পাদদেশে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করেন তিনি। এসময় তিনি (ভারপ্রাপ্ত ভিসি) ছাড়া রুয়েট প্রশাসনের উর্ধ্বতন কোনো কর্তা ব্যক্তি তার সঙ্গে ছিলেন না। এর কিছুক্ষণ পরেই রুয়েটের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেনের নেতৃত্বে শহীদ মিনারে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয়।

এসময় কর্মসূচিতে রুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি, গবেষণা ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন; শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি, পরিকল্পনা ও উন্নয়নের পরিচালক অধ্যাপক ড. মিয়া মো. জগলুল সাদত, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রবিউল আওয়াল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রুয়েটের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘রুটিন দায়িত্বের ভিসি যাই হোক না কেন; তাকে তো শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রুয়েটের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তা ব্যক্তিগণ আলাদাভাবে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচি পালন করা যুক্তিযুক্ত নয় বলে আমার কাছে মনে হয়েছে।

আলাদাভাবে কেন শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচি পালনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনকে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।

রুয়েটের ভাইস-চ্যান্সেলর (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘কেন তারা আলাদা করে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচি পালন করেছে তা আমার জানা নেই। তবে তারা আলাদা করে কর্মসূচি পালন করতেই পারে।

জি/আর