সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
বক্সিং রিং থেকে বেরিয়ে চেয়ারে বসে বিশ্রাম নিতে নিতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন ২০ বছর বয়সী এক তরুণী বক্সার।
জ্যোতি প্রধান নামের ওই বক্সার ভারতের দিল্লিতে পশ্চিমবঙ্গের হয়ে দেশটির জাতীয় প্রতিযোগিতায় প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
তার এমন আকস্মিক মৃত্যুতে রহস্যের জন্ম দিয়েছে। এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এভাবে জ্যোতির মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না পশ্চিমবঙ্গের বক্সিং ফেডারেশন।
বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, অন্যান্য দিনের মতোই বুধবার পশ্চিমবঙ্গের খিদিরপুরে থেকে সাইকেল চালিয়ে ভবানীপুরে অনুশীলন করতে এসেছিলেন জ্যোতি। বিকাল ৫টায় রিং-এ নেমে তিন মিনিট করে পরপর দুই বার পাঞ্চিং ব্যাগে ঘুষি মারা অনুশীলন করছিলেন তিনি। এর পর ক্লান্ত শরীরে বিশ্রাম নিতে গিয়ে চেয়ারে বসে পানি পান করতে গিয়েই লুটিয়ে পড়েন তিনি। পানি আর পান করা হয়নি তার।
তাকে দ্রুত স্থানীয় এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসেন অনুশীলনের সঙ্গী সুরজ সিং ও শিবমকুমার সিং। চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে জ্যোতিকে বাঁচানোর চেষ্টায় গাফিলতি ছিল বলে এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকদের ওপর গুরুতর অভিযোগ এনেছে জ্যোতির সতীর্থরা।
অন্তত ১০ জন জুনিয়র বক্সার এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সংবামাধ্যমকে জানান, ‘ওই সময় চিকিৎসকরা ভালো করে দেখেনইনি জ্যোতিকে। হাতে কি একটা লাগিয়ে দিয়ে তারা জানান, মারা গেছে। আরও একবার দেখুন বলে বারবার অনুরোধ করা হলেও চিকিৎসকরা আমাদের কথায় কান দেয়নি।’
বক্সারদের এমন গুরুতর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা উল্টো অভিযোগ করেন, বক্সিং রিংয়ে স্পর্শকাতর জায়গায় আঘাতের কারণে জ্যোতি মারা গিয়ে থাকতে পারেন।
এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ওই বক্সিং ক্লাবের সম্পাদক অসীম হালদার।
তিনি বলেন, ‘অনুশীলন চলাকালীন এ ঘটনা ঘটেছে। ওই সময় রেফারি রিংয়ে উপস্থিত ছিলেন। রেফারি জানিয়েছেন, অনুশীলনে জ্যোতি কোনো আঘাত পায়নি। বিশ্রামের সময় পানি পান করতে গিয়েই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে।’
অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ নিয়ে ইতিমধ্যে এলাকায় বেশ তোলপাড় শুরু হয়েছে। তবে জ্যোতির দেহ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশের পরই তার মৃত্যুর রহস্য উন্মোচন হবে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আরও জানায়, ১০ বছর ধরে বক্সিং শিখছিলেন দরিদ্র পরিবারের মেয়ে জ্যোতি প্রধান। এর সঙ্গে তিনি কারাতেও শিখতেন। বেশ কয়েকবার জাতীয় ও স্টেট লেভেলে অংশ নিয়ে পুরস্কার জিতেছেন জ্যোতি।
জাতীয় সোনার পদকও অর্জন করেছিলেন এই প্রতিশ্রুতিবান তরুণী বক্সার।