রামেকের অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া কিলো প্রতি ৩০ টাকা

নূপুর মাহমুদ
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী বহনের নামে বাণিজ্য বন্ধের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ চালু করেছেন এক চিকিৎসক। এর জন্য অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর ট্রলি ব্যবহারের নামে বাণিজ্য বন্ধের জন্য সেলফ ড্রাইভেন ট্রলি চালু করা হয়েছে। এতে করে রোগীর স্বজনরাই ট্রলিতে করে রোগী পরিবহণ করতে পারছেন। হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের আবাসিক সার্জন দ্বীন মোহাম্মদ সোহেল রামেক কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় এ কার্যক্রম চালু করেন।

রামেক সূত্র মতে, গত প্রায় তিন মাস ধরে দেশে প্রথম ৩০টি সেলফ ড্রাইভেন ট্রলি চালু করা হয়েছে রামেক হাসপাতালে। ফেরতযোগ্য ১০০ টাকা জমা রেখে ট্রলিতে করে রোগী পরিবহণ করতে পারেন স্বজনরা। ট্রলি জমা দিয়ে টাকা ফেরত নেন তারা। এছাড়া লাশ পরিবহন সিন্ডিকেটের বেশী ভাড়া নেয়া বন্ধের জন্য কিলোমিটার প্রতি ৩০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। আগে একেকটি লাশ পরিবহণের জন্য ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করা হতো। এতে করে ১৫ কিলোমিটার পথের জন্যেও কমপক্ষে দুই হাজার টাকা ভাড়া আদায় করা হতো। আর বাইরের জেলার ক্ষেত্রে লাশ জিম্মি করে ৫-১০ হাজার বা তার চেয়েও বেশি টাকা নেয়া হতো। হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বাইরের লক্কড়-ঝক্কড় মার্কা মাইক্রোবাসকে অ্যাম্বুলেন্স বানিয়ে এ টাকা আদায় করা হতো।

এখনো এসব মাইক্রোবাস আছে। তবে ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে হাসপাতাল থেকে। এর জন্য প্রতি কিলোমিটার প্রতি ৩০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। পাতালের অর্থপেডিক বিভাগের আবাসিক সার্জন ডাক্তার দীন মোহাম্মদের একান্ত প্রচেষ্টায় এ ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়া হয় ফলে আগে যেখানে ৬০ কিলোমিটারের জন্য ৩-৫ টাকা ভাড়া আদায় করা হতো, এখন সেখানে ১ হাজান ৮০০ টাকা দিয়েই লাশ নিয়ে যেতে পারছেন স্বজনরা।

গত১০ জানুয়ারী থেকে পরিবর্তন এসেছে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সসের সেবায়।
বাণিজ্য ঠেকাতে চিকিৎসাধীন কোনো রোগী মারা গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে ছাড়পত্রে কিলোমিটার দুরুত্ব লিখে দেয়া হচ্ছে। সে অনুযায়ী অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া নিতে হচ্ছে চালকদের।
হাসপাতাল সৃত্রে জানা যায়, জরুরী বিভাগের সামনে ২৪ ঘন্টায় অ্যাম্বুলেন্সের এই সেবা নির্ধারিত থাকবে । রোগীর স্বজনরা কোনোভাবে যেন ভোগান্তি তে না পড়েন সে জন্য মুজিববর্ষের দিন থেকে এ নতুন নিয়মটি কার্য়কার করা হয়।

হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের আবাসিক সার্জন দ্বীন মোহাম্মদ সোহেল বলেন, হাসপাতালের সামনে প্রায় ২০টির মত লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে থাকে। তবে চিকিৎসাধীন কোনো রোগী মারা গেলে গাড়িচালকরা অসহায়িত্বের সুযোগ বুঝে দু হাজার টাকার ভাড়া নিচ্ছেলো ৬-৭ হাজার টাকা যা গরীব অসহায় লোকজনের পেক্ষে কোনো ভাবেই দেয়া সম্ভব ছিলো না । সেজন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। যাতে স্বজনরা ভোগান্তিতে না পড়েন লাশ নিয়ে। এছাড়াও রোগী পরিবহনের জন্য ট্রলির নিয়োগ বাণিজ্যে মেতে উঠতেন হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মচারীরা সেটিও বন্ধ করা হয়েছে।’

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: জামিলুর রহমান বলেন, হাসপাতাল কেন্দ্রিক লাশ পরিবহনের নামে যে বাণিজ্য ছিরো সেটি বন্ধ করতে পারার উদ্যোগটি প্রশংসনীয়। এর জন্য ডাক্তার দীন মোহাম্মদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। তিনি এই কাজটি করতে পেরেছেন।

 

স/আর