রাবি: ৬৮ বছরের পথচলা

মামুন আ. কাইউম:


আজ ৬ জুলাই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৮তম প্রতিষ্ঠবার্ষিকী। দীর্ঘ এ পথপরিক্রমায় দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির নাম যুক্ত হয়েছে।



শুধু ইতিহাস-ঐতিহ্যেই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়টির প্যারিস রোডের গগন শিরীষগাছগুলোর মতোই দেশের শিক্ষা ও গবেষণায় অবদান রেখে বীরদর্পে দাঁড়িয়ে আছে প্রতিষ্ঠানটি। দেশের উত্তরাঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীসহ অন্যান্য অঞ্চলের মানুষকে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এগিয়ে নিতে ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়টি যাত্রা শুরু করে।

১৯৪৭ সালে স্যাডলার কমিশনের সুপারিশে এ অঞ্চলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জোরালো দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৫০ সালে রাজশাহীর বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি হয়। ১৯৫২ সালে শহরের ভুবনমোহন পার্কে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবিতে জনসভা হয়। অনেক আন্দোলনের পর তৎকালীন আইনসভার সদস্য মাদার বখশের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৫৩ সালের ৩১ মার্চ প্রাদেশিক আইনসভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা আইন পাস হয়।

প্রফেসর ইতরাত হোসেন জুবেরীকে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রথম উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়। ক্লাস শুরু হয় শহরের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান রাজশাহী কলেজে। সাতটি বিভাগে মাত্র ১৬১ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। পরে ১৯৬১ সালে অস্ট্রেলিয়ান স্থপতি ড. সোয়ানি টমাসের পরিকল্পনায় মতিহারের সবুজ চত্বরের নিজ ক্যাম্পাসটি প্রতিষ্ঠিত হয়।

প্রতিষ্ঠার পর ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা শহীদ হওয়ায় বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবার যুক্ত হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। মহান মুক্তিযুদ্ধেও বর্বর পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক হবিবুর রহমান, মীর আবদুল কাইয়ুম, সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাড়াও ৩০ জন ছাত্র, কর্মকর্তা ও কর্মচারী শহীদ হন।