রাবি ছাত্রী রিক্তার রহস্যজনক মৃত্যু, সহপাঠী-শিক্ষকদের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি

রাবি প্রতিনিধি:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রিক্তা আক্তার নামের এক ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৩১ জুলাই) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে আইন বিভাগের ব্যনারে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে তারা এই দাবি জানান।

এছাড়াও কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা আরও চারটি দাবি জানান। দাবীগুলো হলো, অভিযুক্ত রিক্তার স্বামী রাব্বির ছাত্রত্ব বাতিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি এবং ভিকটিমের (ভুক্তভোগী) পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া। কর্মসূচিতে আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আহসান হাবীবের সঞ্চালনায় প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

রিক্তার সহপাঠী ও আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কায়েস মাহমুদ বলেন, রিক্তার কোন ঘনিষ্ঠ বন্ধু-বান্ধবী ছিলো না। তার স্বামী কারো সাথে কথা বলতে দিতো না। রাব্বি রিক্তার কাছে ১ লাখ টাকা যৌতুক চেয়েছিল যেটা না দেওয়ায় তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হতো।

মানববন্ধনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মাহাবুবা কানিজ কেয়া বলেন, আজকে আমরা অত্যন্ত লজ্জিত, বিমর্ষ ও মর্মান্ত। ডমেস্টিক ভায়োলেন্সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী রাব্বি তার স্ত্রী রিক্তাকে নির্মম, পাশবিকভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করে। আমাদের দেশে যেসব নারীর ওপর নির্যাতন, বিমর্ষভাবে হত্যা করা হচ্ছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ আমাদের রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের কাছে চাঞ্চল্যকর রিক্তা হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, এটি কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। যে বা যারা এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তার সুষ্ঠু তদন্ত করে দ্রুত বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হোক। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চাই যাতে রিক্তা হত্যার সঠিক তদন্ত ও বিচারিক কার্যক্রম বেগবান হয়।

আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলিম বলেন, এটা একটা সুস্পষ্ট মার্ডার, বিভিন্নভাবে প্রপাগান্ডা ছড়ানো হয়েছে যে তার চরিত্র খারাপ। প্রশাসনের উচিত দ্রুত সময়ের মধ্যে এই হত্যা মামলার বিচার ও আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা।

গত শুক্রবার (২৯ জুলাই) রাতে নগরীর ধরমপুরে অবস্থিত ভাড়া বাসা থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাবির মোছা. রিক্তা আক্তার নামের শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন তার স্বামী। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গতকাল শনিবার দুপুরে মেয়ের বাবা লিয়াকত আলী জোয়ারদার বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় মৃতের স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পরে মতিহার থানা পুলিশ এই মামলায় রিক্তার স্বামীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। মৃত রিক্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। স্বামীর সঙ্গে রাবির পার্শবর্তী বিনোদপুরের ধরমপুর এলাকায় থাকতেন। স্বামী একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বর্ষের ফলিত বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। তার মৃত্যুতে আজ এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

জি/আর