রাবি অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলায় শিক্ষক মহিউদ্দিন চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার

রাবি প্রতিনিধি :
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলার চুড়ান্ত রায়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মিয়া মো. মহিউদ্দিনের ফাঁসির দণ্ড বহাল থাকায় তাকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গত ২৩ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ইস্যু করে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল মামলা নং- ৩৮/০৭. এম. জি. আর. নং- ১০/০৬ ও মতিহার থানার ২/০৬ নং মামলায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান করে। সুপ্রীম কোর্ট এই মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখায় সরকারী কর্মচারী (শৃংখলা ও আপীল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৪২ ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদানের তারিখ অর্থাৎ ২২-০৫-২০০৮ তারিখ হতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এর পদ ও চাকরি থেকে তাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হলো।’
সম্প্রতি অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করেছেন রাষ্ট্রপতি। সেই চিঠি ডাক বিভাগ হয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছেছে। জেল কোড অনুযায়ী, চিঠি হাতে পাওয়ার ২১ থেকে ২৮ দিনের দিনের মধ্যে যেকোনো দিন ফাঁসি কার্যকর করা হবে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ আসামিকেই কনডেম সেলে রাখা হয়েছে বলে কারা সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে ২০০৬ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পশ্চিমপাড়া আবাসিক কোয়ার্টার থেকে নিখোঁজ হন অধ্যাপক তাহের। বাসাটিতে তিনি একাই থাকতেন। বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম তার দেখাশোনা করতেন। পরদিন বাসার পেছনের ম্যানহোল থেকে অধ্যাপক তাহেরের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ৩ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে রাজশাহীর মতিহার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এদিকে অধ্যাপক তাহেরের করা একটি জিডি’র সূত্র ধরে বিভাগের শিক্ষক মহিউদ্দিন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী, কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীরসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ রাবি শিক্ষক মহিউদ্দিন ও শিবির নেতাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত ৪ জনকে ফাঁসি ও দুইজনকে খালাস দেন। দণ্ডিত অন্যরা হলেন- জাহাঙ্গীরের ভাই নাজমুল ও তার স্ত্রীর ভাই সালাম। তবে বিচারে খালাস পান শিবির নেতা সালেহী ও আজিমুদ্দিন মুন্সি। পরে উচ্চ আদালতে আপিলের মাধ্যমে নাজমুল এবং সালামের রায় কমিয়ে যাবজ্জীবন করা হয়। এ দুজনের দণ্ড বৃদ্ধির জন্য আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। কিন্তু শুনানী শেষে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেয়া রায়ই বহাল রাখেন।